অনলাইনে ইনকামের বিভিন্ন উৎস যা আপনাকে সাহায্য করবে

যারা আইডিয়া খুঁজে পান না, লেখাটি তাদের জন্য৷ আশা করি এর মধ্যে যেকোন একটি আপনার কাজে লাগবে৷

১. আউটসোর্সিং:

আপনি কি জানেন Freelancer সাইটিতে মোটামুটিভাবে ১৯০০+ ধরনের কাজ আছে? আপনি কি এই ১৯০০ ধরনের কাজের মধ্যে একটিও করতে পারবেন না? অবশ্যই পারবেন৷ একটু বুদ্ধি খাটলে ভিন্ন ভিন্ন আউটসোর্সিং সাইট থেকে অনেক কিছু পেতে পারেন আপনি৷

২. ডাটা এনালাইসিস্ট:

বর্তমান অনলাইন জগত ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ একাজে প্রচুর ডাটা এনালাইসিস্টের প্রয়োজন হয়৷ রিসার্চের কাজগুলো ছাড়াও মেটা ডাটা কিংবা বিগ ডাটা এনালাইসিস্টদের কদর অনেক৷ বড় বড় কোম্পানিতে সহজে জব পান তারা৷ ভবিষ্যতেও এই চাহিদা বাড়তে থাকবে৷

৩. ভিডিও এডিটিং:

যতদিন যাবে ভিডিও এডিটর এর চাহিদা বাড়তে থাকবে৷ তাছাড়া একাজে তুলনামূলক খুব বেশি খাটবার প্রয়োজন হয় না কিন্ত সহজেই প্রয়োজনীয় স্কিলটা অর্জন করা যায়৷ চাকরি বা পড়াশোনার পাশাপাশি এটি চালিয়ে যেতে পারেন৷

ইউটিউবার, ছোট বড় কোম্পানী, বিজ্ঞাপন, ডকুমেন্টারি, ইন্টারটেইনমেন্ট, মিডিয়া হাউজ ইত্যাদি বিভিন্ন খাতে ভিডিও এডিটরের প্রয়োজন অনেক হয়৷ নিজে থেকে ছোট ছোট ভিডিও তৈরি করে বিভিন্ন জায়াগায় ছাড়তে থাকেন৷ একসময় দেখবেন বিভিন্ন জায়গা থেকে কাজের অফার পাচ্ছেন৷

৪. এলগরিদম এক্সপার্ট:

আপনি যদি এলগরিদম ভাল বুঝেন তাহলে দারুণ৷ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং ভবিষ্যত মেটাভার্সের যুগে আপনাকে এজন্য আলাদা কদর করতেই হবে৷ এটি অত্যন্ত ক্রমবর্ধমান একটি সেক্টর; কিন্ত শিখতে প্রচুর মেধা, শ্রম এবং সময় লাগবে৷

৫. টাইপিং বা শর্টহ্যান্ড:

আপনার টাইপিং স্পিড ভালো থাকলে এর কাজ সহজে পেয়ে যাবেন৷ তাছাড়া সরকারি/বেসরকারি জব সেক্টরগুলোতে পড়াশুনা শেষে অনায়াসে জব হয় তাদের৷ প্রতিটি চাকরির পত্রিকার বিজ্ঞাপন তার প্রমাণ৷ তবে এক্ষেত্রে বাংলায় মিনিটে ২৫ টি শব্দ এবং ইংরেজিতে মিনিটে ৪০ টি শব্দ টাইপ করার দক্ষতা অর্জন করতে হয়৷ তাছাড়া করতে পারেন ফ্রিল্যান্সিংও৷

৬. জব অ্যাসিস্ট্যান্ট:

পড়াশুনা/চাকুরির পাশাপাশি আপনি বিভিন্ন কোম্পানির জব এসিস্ট্যান্টের কাজ করতে পারেন৷ তাদের বিভিন্ন প্রজেক্ট করে দিবেন টাকার বিনিময়ে কিংবা তাদের প্রজেক্টগুলোর সহকারী হিসেবে কাজ করবেন৷ প্রয়োজনে তাদের সাথে ইন্টার্নশীপ করবেন৷

তাদের কাছে আপনার স্কিল শেয়ার করবেন৷ একটা পর্যায়ে এই স্কিলগুলো আপনার কাজে দিবে৷ এই ধরণের জব খোঁজার ক্ষেত্রে লিংকডইন আপনাকে ভাল সহায়তা দিতে পারে৷

৭. ট্যুর গাইড:

ভ্রমণ আপনার ভাল লেগে থাকলে অনলাইনে আপনার বিভিন্ন ট্যুর আইডিয়া শেয়ার করতে পারেন৷ তাছাড়া বিভিন্ন ট্যুর ম্যানেজমেন্ট কোম্পানীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে হয়ে যেতে পারেন তাদের এজেন্টও৷

৮. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টট/ ইভেন্ট ক্যাটেরার:

এইবিষয়টি নিয়ে অনেকই স্বচ্ছ ধারণা রাখে না৷ একটি কোম্পানি বিভিন্ন প্রজেক্ট থেকে শুরু করে পাড়াগাঁয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্যন্ত এর আওতায় পড়ে৷ যেকোন কাজ বা প্রজেক্ট শুরু থেকে সফলভাবে শেষ করা একটি হচ্ছে ইভেন্ট৷ এরকম ইভেন্ট সাজিয়ে আপনি প্রাসঙ্গিক প্রতিষ্ঠান বরাবর প্রজেক্ট ড্রপ করেন৷ (যেগুলোতে আপনার দক্ষতা আছে)৷ যথাযথ কতৃপক্ষের নিকটে পাঠিয়ে দিতে থাকেন৷

বিগত কয়েকটি প্রজেক্ট হিস্টরি ঘেঁটে তার থেকে ভাল ইভেন্ট বানা৷ HR বরাবর মেইল করতে থাকেন৷ কয়বার বাদ দিবে আপনাকে? আপনার ভাগ্য ভাল হলে ঐপ্রজেক্টের দায়িত্ব আপনার কাঁধেই পড়তে পারে৷ একটি ছোট্ট ট্রিকস দেই: প্রথমে ছোট ছোট কোম্পানি দিয়ে শুরু করবেন৷

৯. রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট:

আপনি একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হলে কিংবা আপনার একাডেমিক দক্ষতা ভালো থাকলে আপনি একজন রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হতে পারেন৷ দেশীয় শিক্ষকদের ছাড়াও বিদেশের পিএইচডি, ফেলো এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের রিসার্চের সাহায্যকারী হয়ে উঠতে পারেন৷

তাদের প্রায় সকলেরই রিসার্স অ্যাসিস্ট্যান্টের প্রয়োজন হয়৷ তারা ভাল অর্থের বিনিময়ে দক্ষ লোক নিয়োগ দেয়৷ তাছাড়া শুধু পড়াশুনাই না কোম্পানির ডকুমেন্টরি বা অন্যান্য কাজেও রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্টের দরকার পড়ে৷

১০. কনসালটেন্সি:

এই কাজটা অনেকটা উপদেষ্টাদের মত৷ বাজারে এক্ষেত্রে যথাযথ লোকের অভাব শুধু৷ একটি প্রতিষ্ঠান কেমন চলছে, তার কার্যাবলীগুলো কেমন, সেগুলো আধুনিক না সনাতনী, কোম্পানির ভুল কোথায়, কিভাবে কাজ করলে আরো উন্নতি হবে, প্রতিযোগি প্রতিষ্ঠান ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে এবং কেন এগিয়ে যাচ্ছে, তাদের আপকামিং প্রোগ্রামগুলো ইত্যাদি সম্পর্কে আইডিয়া দিয়ে আপনি একজন কনসালটেন্ট হতে পারেন৷

ঘরে বসে বসে করতে পারেন অর্থ উপার্জন৷ লিংকডইন, বিভিন্ন জব ওয়েবসাইট বা এপসগুলো এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে পারে৷ সেখান থেকে তাদের HR বিভাগের ঠিকানা নিয়ে কয়েকটায় আপনার আইডিয়া মেইল করুন৷ প্রয়োজনে কয়েকটা ফ্রি আইডিয়া দিতে থাকেন৷ আপনাকে কাজে ডাকবে না মানে?

১১. ই-কমার্স:

বর্তমানে বহুল প্রচলিত সেক্টর৷ আপনার আইডিয়া ভাল হলে ই-কমার্সে নেমে যেতে পারেন৷ এখানে আপনার মেধাস্বত্ব কিংবা পণ্য বিক্রির চেষ্টা করতে পারেন৷ তবে খেয়াল রাখবেন মানুষের প্রয়োজনীয়তাকে দূর করতে পারলে আপনার পণ্য ও আইডিয়া অনেকদূর এগিয়ে যাবে৷

বাংলাদেশের ই-কমার্স সেক্টরে আমি প্রায়ই দেখি খেজুরের গুড়, কাপড়, হস্তশিল্প, বই ইত্যাদি বিক্রি করতে৷ যদিও বই বিক্রির একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দিয়েছি আমি নিজেও৷

তবুও এগুলো ছাড়াও আরো অনেক কিছু বিক্রি করা যায়৷ বিদেশে খুব প্রচলিত কিন্ত এদেশে নেই এরকম পণ্য নিয়ে কাজ করুন, রাতারাতি সাফল্য পেয়ে যাবেন৷১২. অ্যালিফয়েট মার্কেটিং/CPA মার্কেটিং: অল্প সময়ে কাজ শিখে সহজে আপনি এগুলো করতে পারেন৷ এবিষয়ে ইউটিউবে প্রচুর ভিডিও পাবেন৷ নেটে পাবেন প্রচুর তথ্য৷

১৩. ড্রপ শিপিং:

এতে বেশ ভালো কমিশন পাওয়া যায়৷ আপনি ঘরে বসে দুই বা একাধিক কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিলে ডলারে কমিশন পাবেন৷ গুগলে সার্চ করলে অনেক তথ্য পাওয়া যায় এ সম্পর্কে৷ না জানলে জেনে নিন৷

১৪. অনুবাদ:

আপনার যদি কোন একটা/দুইটা ভাষায় ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে অনুবাদের কাজ করতে পারেন৷ কিন্তু এক্ষেত্রে গুগল ট্রান্সেলেটর হওয়া যাবে না৷ অথাৎ, আপনার দুইটা ভাষার উপরেই বেশ ভালো রকমের দক্ষতা থাকতে হবে৷

১৫. টিউশনি এবং কোচিং:

এ বিষয়ে সবাই জানেন৷ এর সবচেয়ে বড় সুবিধাটা হচ্ছে টাকা হাতে হাতে পাওয়া যায়৷ তাই অনেকেই এটাকেউ পছন্দ করেন৷ কিন্ত এর থেকেও অনেক ভাল ভাল কাজ আছে৷ শিখলে চিরস্থায়ী কিছু শিখুন৷ তবে টিউশন ও কোচিং যদি আপনার ক্যারিয়ার হয় সেক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা৷

১৬. ক্যাম্পাস এম্বাসেডর:

বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিনিধি হিসেবে ক্যাম্পাসের এম্বাসেডর নিয়োগ দেয়৷ একটু চোখকান খোলা রাখতে হবে৷ বিভিন্ন সময়ে এরকম পোস্টার দেখবেন কিংবা অনলাইনে যোগাযোগ করবেন৷ প্রথমে ভলান্টিয়ারিজম হলেও করেন৷ তাদের সাথে থাকেন৷ অনেক কিছু শিখতে পারবেন, জানতে পারবেন৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকেন্ড ইয়ারে থাকতে আমি এরকমভাবে রবি আইডিয়া হান্টের সাথে ছিলাম৷ পরে NTV আয়োজিত Rventure-2.0 তে প্রায় ২৩০০ আইডিয়ার ভিতরে সিলেক্টেড আইডিয়াদাতা হয়েছিলাম৷ সেই অভিজ্ঞতা পরবর্তীতে International Hult prize -এ কাজে লাগে৷

১৭. রেজ্যুমি মাস্টার:

রেজ্যুমির উপরে ভালো দক্ষতা থাকলে অন্যের রেজ্যুমি ঠিক করে দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন৷

১৮. ইউটিউবিং:

আপনার যা দক্ষতা আছে তাই শেয়ার করেন৷ প্রয়োজনে নিজের জন্য ভিডিও তৈরি করে রেখে দেন৷ ফেসবুকে ভিডিও ছাড়েন৷ একটা সময় দেখবেন ইউটিউবের পাশাপাশি ফেসবুক দিয়েও অর্থ আসছে৷ তবে এখানে ধৈর্য ধারণ করা জরুরি৷ কিন্ত সফল হলে অর্থের পাশাপাশি খ্যাতিও আছে৷

১৯. কনটেন্ট রাইটার:

বিদেশ এবং বাংলাদেশে কনটেন্ট রাইটারের চাহিদা প্রচুর৷ ব্লগার, শিক্ষার্থী, রিসার্চার, ইউটিউবার, ফটোগ্রাফার, ইতিহাসবিদ প্রায় সবারই কন্টেন্ট রাইটারের প্রয়োজন পড়ে৷ বেশ কয়েকটি সাইট আছে যারা আর্টিকেলপ্রতি ২০০-৪০০ ডলার পর্যন্ত দিয়ে থাকে৷

২০. ব্লগার:

আপনি যেকোন একটা বিষয়ে ভালো পারেন? লেখালেখি করা ভাল লাগে? তৈরি করে ফেলেন ব্লগ৷ নিজের জন্যই না হয় রেখে দিন সেগুলো৷ একটা সময় সেগুলোই আপনার সম্পদ হয়ে উঠবে৷ অর্থ উপার্জন করতে পারলে তো ভাল; না পারলেও অন্তত চাকরির ভাইভায় নিজের একটা কিছু আছে বলে গর্ব করতে পারবেন৷

২১. ভয়েজ মেকার:

আপনার কন্ঠ ভাল? তাহলে ভিডিও বা বিভিন্ন এন্টারটেইনমেন্ট মিডিয়া হাউসগুলোতে যোগাযোগ করেন৷ বিভিন্ন রেডিওগুলো RJ হবার সুযোগ খুঁজেন৷ সংবাদপত্র পাঠ বা রিপোর্টারও হবার চেষ্টা চালাতে পারেন৷ তাছাড়া এন্টারটেইনমেন্ট মিডিয়া হাউজ এবং ডাবিং হাউজগুলো লোকবল খুঁজে৷ যোগ দেন তাদের সাথে৷ ভাল কিছু করলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করে অর্থও আনতে পারবেন৷

২২. ওয়েবসাইট মেকার:

বর্তমানে যারাই অনলাইনে কিছু করতে চায়, তাদের প্রায় সবাই একটি করে ওয়েবসাইট খুলে৷ ওয়েবসাইট কি করে তৈরি করে তা শিখে রাখতে পারেন৷ তবে এই সাইটে কাজ যেমন বেশি, তেমনি ওয়েবসাইট মেকারও বেশি৷

২৩. ওয়েব ডিজাইনার:

আপনি ওয়েব সাইট তৈরি করতে না পারলেও সাজিয়ে দিতে পারেন৷ CSS-সহ আরো কয়েকটি বেসিক শিখলে আপনি কিছু দিনের মধ্যে আয় শুরু করতে পারবেন৷ বিস্তারিত গুগল করেন৷

২৪. ইথিক্যাল হ্যাকার:

সরকারিভাবে এখন এর চাহিদা বাড়ছে৷ পাশাপাশি ব্ল্যাক মার্কেটের দখল তো আছেই৷ বর্তমান চর্তুথ শিল্প-বিল্পব যখন টিকেই আছে তথ্য-প্রযুক্তির উপরে, তখন এর কয়েকটা চোরাগলি শিখে রাখলে ক্ষতি কি? তাছাড়া যারা ইথিক্যাল হ্যাকিং করে তাদেরকে মোটামোটিভাবে সম্মানীয় লোক ভাবা হয়৷

২৫. প্রোগ্রামার:

ভবিষ্যতে সবকিছু চলবে প্রোগ্রাম দিয়ে৷ তখন নিশ্চিতভাবেই বলা যায় এর চাহিদা কয়েকগুণ বাড়বে৷ এখনই ভালো প্রোগ্রামারের চাহিদা বাড়ছে৷ পার্মানেন্ট জবের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিংও করতে পারবেন এটি দিয়ে৷ প্রোগ্রামিং ভাষা শিখতে কষ্ট হলেও, এর সুবিধা হচ্ছে একটি শিখলে বাকি ভাষাগুলোও সহজে মনে হবে৷

২৬. বুস্টার ম্যান:

আপনার ইন্টারন্যাশনাল কারেন্সি ডলার কার্ড থাকতে হবে৷ তাহলে বিভিন্ন অনলাইন পেজ/ওয়েবসাইটে বুস্ট করতে পাবেন৷ ভবিষ্যতে ফেবসবুক পেজের মাধ্যমে ব্যবসা বাড়বে৷ আপনি ১০০০ এ ১০০ টাকা কাটবেন৷ গেমার,অনলাইন বিজনেসম্যান, আউটসোর্সার, প্রবাসী, কয়েন মাইনিংকারী, ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটার সবার এই একটি জায়গায় আপনাকে প্রয়োজন পড়বে৷

২৭. গ্রাফিক্স ডিজাইনার:

এ বিষয়ে আমার থেকে আশা করি আপনারাই বেশি অভিজ্ঞ৷ মোবাইল দিয়ে অতটা ভাল না হলেও আপাতত বেসিকটা শেখা যায়৷

২৮. ফটোগ্রাফার:

এজন্য ফটোগ্রাফিতে শখ থাকতে হবে৷ বিভিন্ন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, বিয়ে, প্রি-ওয়েডিং ফটোশ্যুট, বিভিন্ন দিবসের ফটোশ্যুট, র্যাগডে, এক্সকারশন ইত্যাদিতে আপনাকে ডাকা হবে৷ তাছাড়া তোলা ছবি বিভিন্ন ওয়েবসাইটেও ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন৷

২৯. ফেসবুক গ্রুপ ক্রিয়েটর:

জ্বি হা৷ ফেসবুক গ্রুপেরও চাহিদা আছে৷ বড় বড় গ্রুপ নিমিষে বিক্রি করা যেতে পারে৷ আমি নিজেও ইতিপূর্বে ই-কমার্সের জন্য কিছু গ্রুপ কিনেছি এবং বিক্রি করেছি৷ তাছাড়া কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান/কোম্পানী এডমিশনদের অর্থ দেয় তাদের পণ্যগুলো প্রচার করার জন্য৷ একটি সাধারণ ধারণা দেই, এক লক্ষ মেম্বারের একটি গ্রুপের মূল্য এক লক্ষটাকা বা তার চেয়ে বেশি হতে পারে৷

৩০. সোস্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েঞ্জার:

আপনি কিছু পারেন না, কিন্ত ফেসবুকে বড় বড় স্ট্যাটাস লিখতে পারেন৷ আপনার অনেক অনেক ভক্ত৷ তাহলে আপনি ক্ষেত্রবিশেষে কিছু কিছু কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানকে প্রমোট করতে পারেন৷ ফেসবুক সেলিব্রেটিরা অনেকেই এটা করে থাকে৷ তবে এক্ষেত্রে পরে যেন খারাপ সার্ভিস পেয়ে পাবলিক আপনাকে গালি দেয় সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন৷এগুলো ছাড়াও আরো কিছু আছে যেগুলো আপাতত ছোট মনে হলেও খারাপ না৷ যেমন:

১. পার্টটাইম জব (দোকান/ রেস্তেরাঁ/সুপারশপ/বইয়ের দোকান): কাজ না থাকলে বসে বসে অন্তত মুড়ি ভাজতে পারবেন৷

২. পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্সি: শুনতে খারাপ শোনালেও কাজটা আদতে খারাপ নয়৷ মোটামুটিভাবে বেশ থ্রিলিং৷

৩. ড্রাইভিং: বিদেশে এই জিনিসটি প্রায় সবাইকে শিখতে হয়৷

৪. ফুডকোর্ট/ড্রিংকস এর দোকান: দুই একটা হলে খারাপ না৷ বেতন দিয়ে কাজ শিখিয়ে কাউকে রেখে দিলেন৷

৫. অনলাইন সলুউশন দোকান: বিশেষত প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুযোগ অনেক৷ একটা কম্পিউটার আর নেট কানেকশন নিয়ে কাউকে বসিয়ে দিলেন৷ ব্যাস৷ ফটোকপি, ছবি তোলা, মেমোরিলোড আর অনলাইনে কাজ করে দিনে ৫০০ টাকা পকেটে৷

৬. জনপ্রিয় খাবার: শহরে কিংবা বিদেশে জনপ্রিয় ও প্রচলিত অনেক খাবার আছে যেগুলোর গ্রামের মানুষ সাধারণত আগ্রহী হলেও খেতে পায় না৷ আপনি এমন কিছু ইউটিউব থেকে শিখে একবার গ্রাম্য বাজারে দিয়ে দেখেন৷ মৌমাছির মত মানুষ পাবেন৷

৭. কুটির শিল্প: গ্রামের অনেক মানুষ বেশ ভাল ভাল হস্তশিল্পের কাজ জানে সেগুলো প্রডাক্ট বানিয়ে বিক্রির চেষ্টা আপনহ করতেই পারেন৷ কিংবা পারেন বিদেশে বিক্রি করতে৷

৮.খামার: গবাদি পশু আর মাছকে পোষ মানাতে পারলে ভালো৷

৯. নার্সারি তৈরি: বিদেশি অনেক ফলগাছ আছে৷ যেগুলোর মধ্যে যেকোন একটাই আপনাকে লক্ষ টাকার হাদিশ দিতে পারে৷

কিছু কথা:

  • কোন কাজেই আপনি রাতারাতি সাফল্য পাবেন না৷ অল্প কিছু করেই যদি অনেক বড় সফলতা চান, তাহলে আপনি বোকা৷

  • যেকাজ যতটা কঠিন-তার সাফল্যে আসা সম্মান ও মূল্য ঠিক ততটাই বড়৷ সুতরাং, সর্বক্ষেত্রে শর্টকাট এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন৷

  • যেকোন ক্ষেত্রে প্রথম ধাপটাই সবচেয়ে কঠিন৷ প্রথম ধাপ শেষ করলেন তো কাজের অর্ধেক শেষ করলেন৷

  • কাজের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রাখা সবচেয়ে জরুরী৷ ধারাবাহিকতা না থাকলে নিশির ডাকে সব হারিয়ে ফেলবেন৷

  • সিদ্ধান্তই নিবেন বুঝে-শুনে এবং ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে৷ যেকেউ বলল আর তার পিছনে ছুটলেন তো মরলেন৷

  • সাহস করে প্রথম পদক্ষেপটা নিয়ে নিন৷ তা সেই কাজটা ছোট নাকি বড় দেখতে যাবেন না৷ নিজের কাছে সঠিক তো, আপনার দুনিয়া সঠিক৷

  • আপনার কাজ নিয়ে কেউ কটাক্ষ করলে উপেক্ষা করতে শিখুন৷ মাথায় রাখবেন বিপদে পড়লে কেউ এসে আপনাকে সাহায্য করবে না; কিন্ত সফল হলে ঠিকই বাহবা দিতে আসবে৷

  • পৃথিবীর সকল মোটিভেশনের সার কথা হচ্ছে 'কাজ কাজ এবং কাজ'৷ সুতরাং সারাদিন শুয়ে বসে ফেসবুক আর ইউটিউব চালিয়ে সফলতা খুঁজলে হবে না৷

  • যেকোন একটি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বা স্পেশালিস্ট হয়ে উঠুন৷ সেখানে যেন আপনার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকে অথবা ঐ বিষয়ে আপনি টপ হবেন৷ তাহলে বিভিন্ন সময়ে সেই কাজে আপনাকেই খোঁজা হবে৷

  • স্বপ্ন দেখলে মিলিওনার হওয়ার স্বপ্ন দেখুন৷ স্বপ্ন দেখলে অনেক বড় কিছু হবার স্বপ্ন দেখুন৷ তাহলে অন্তত অতটা বড় হতে না পারলেও কিছু তো পারবেন৷ শুধু শুধু স্বপ্নকে ছোট করবেন না৷ ছোট করে রাখবেনও না৷

  • বাঘের ভয়ে খায় না মনের ভয়ে খায়৷ সুতরাং কোন কাজ পারবেন না বলে ভাবলেন 'তো আসলেই তা পারবেন না'৷

  • কোন একটি কাজে কয়েকবার উত্থান এবং পতন আসবে৷ এটা হবেই৷ সুতরাং মাঝপথে থেমে যাবেন না৷ থেমে গেলেন তো হেরে গেলেন৷

  • অনলাইনে বা অফলাইনে এমন কাজ খুঁজবেন যেখানে প্রতিযোগিতা সবচেয়ে কম৷ প্রতিযোগিতা যেখানে বেশি কাজের মূল্যও সেখানে কম৷

  • মানুষ খুবই কুইক লার্নার৷ মানুষের মধ্যে আপনি নিজেও পড়েন৷ কেউ যদি ইচ্ছা করে তাহলে তার পক্ষে যেকোন কঠিন কাজই করা সম্ভব বা শেখা সম্ভব৷ শুধু সেইরকমভাবে ইচ্ছে করাটা বাকি৷

  • আপনার কাছে কোন ম্যাটেরিয়াল নেই তো কি হয়েছে৷ থেমে থাকবেন কেন? আপনার ইচ্ছাশক্তিটা আছে না? ঐটার জোরেই এগিয়ে যান৷ ম্যাটেরিয়াল এমনিতেই আসবে৷ আমার কাছে ১ জিবি র্যামের ডিসপ্লে ভাঙ্গা ফোন ছিল শুধু৷ সেটি দিয়েই তিনটি বই অনুবাদ করেছি৷ কাছে ল্যাবটপ ছিল না; তবুও একটি প্রকাশনীর অনলাইন মার্কেটিং কোঅর্ডিনেটর & কনসাটেন্টের দায়িত্ব পালন করেছি৷ আপনার অবস্থা কি এর থেকেও খারাপ?

  • বর্তমান যুগে ইউটিউবের উপরে বড় কোন শিক্ষক হয় না৷ আর গুগলের উপরে কোন পরামর্শদাতা হয় না৷ সকল কিছুর সমাধান আপনি এদের কাছ থেকে পাবেন৷ এদেরকে নিজের কাজে ব্যবহার করতে শিখুন৷ ওরা আপনার জন্যই৷

  • একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দুনিয়াদারি কিংবা আশপাশটা ভুলে যান৷ নিজের জন্য নিজের কাছে স্বার্থবাদী হন৷ সফল হবার পরে সকলের সঙ্গে মন খুলে সম্পর্ক করিয়েন৷ তাতে সফলতার সাথে সাথে সম্মান বোনাস হিসেবে পাবেন৷

  • সরকারী চাকুরি করতে চান? তাহলেও সেটার জন্যও চাকুরি করেন৷ দিনে ৮ ঘন্টা পড়াশুনার চাকুরি করেন অথবা নিজেকে প্রস্তুত করেন৷ এটাকে চাকুরির আগে চাকুরির মত ভেবে নেন৷ দিনের ৮ ঘন্টা ডিউটি করেন৷

  • যে কাজটা আপনাকে বাস্তব ভ্যালু দিবে না, সেটা থেকে দূরে থাকাই ভাল৷ যেমন অনলাইন গেম খেলার আগে ভাবতে পারেন যে, এর 'Value of Reality' ঠিক কতটা?

  • যদি আপনি একটা কাজ দীর্ঘদিন ধরে না চালাতে ইচ্ছুক থাকেন, তাহলে সেটা নিয়ে ১০ বার ভাবেন৷ সাফল্যের ক্ষেত্রে আগ্রহ একটি অন্যতম বড় বিষয়৷

  • দিনে ৪০০ টাকা মজুরির জন্য ময়লাওয়ালা ময়লা ড্রেনে নামে৷ রিকশাওয়ালা মানুষ নিয়ে প্যাডেলের পর প্যাডেল মারে৷ কৃষক রোদে কামলা দেয়৷ আর আপনি ভবিষ্যতের ৫০০০ টাকার জন্য ৫ ঘন্টা কষ্ট করতে পারবেন না তা কি করে হয়।

মোটকথা হচ্ছে সবার আগে নিজেকে প্রস্তুত করেন৷ সারাদিন ফেসবুক, ইউটিউব, বন্ধু-বান্ধব, জিএফ-বিএফ, আড্ডাবাজি না দিয়ে কিছু করেন; কিছু শিখেন৷ প্রতিবছর খোদ বাংলাদেশেই অনেক বিদেশী লোক নেয়া হয়,

মোটা টাকায়৷ কারণ, এদেশে যোগ্য লোক পাওয়া যায় না৷ তাই সবকিছুর আগে যোগ্য হন৷ নিজেকে যোগ্য করে তোলেন; দেখবেন ধীরে ধীরে আপনি সব পাবেন৷

এক পৃষ্ঠা ঠিকঠাক বাংলা দরখাস্ত আপনি লিখতে পারেন না, ৫ মিনিট নিজের সম্পর্কে ইংরেজিতে লিখতে বা বলতে পারেন না; কিন্ত দোষ যদি দেন সরকারের বা ভাগ্যের তাহলে কেমন করে হয়? দুনিয়া তো এত সহজ জায়গা না।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments
ABDUL HAKIM MIAH - May 5, 2022, 1:44 PM - Add Reply

thanks for information

You must be logged in to post a comment.

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
Recent Articles