ইউটিউব থেকে আয় হান্ডেট পার্সেন্ট: প্রতিদিন সারা বিশ্বে ৪০০ কোটির বেশি মানুষ ইউটিউব ভিডিও মানুষ দেখে থাকে। পরিসংখ্যান বলছে, একজন দর্শকের ইউটিউব দেখার গড় সময়কাল ৪০ থেকে ৫০ মিনিট করে।
অর্থাৎ ইউটিউবের মাধ্যমে এক বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে সারা বিশ্বে, আর তাই বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে ইউটিউব আজ এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবং এর ফলে ঘরে বসেই অনলাইনে ইউটিউব থেকে আয়ের সুযোগ তৈরি হচ্ছে আজকাল সারাবিশ্বে। ঘরে থাকা মহিলাদের জন্যও আয়ের একটি সহজ মাধ্যম হল ইউটিউব চ্যানেল।
ইউটিউব থেকে আয় করতে চান? জেনে নিন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ও কয়েকটি বিষয়সমূহ:
ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় | কিভাবে ইউটিউব চ্যানেল থেকে করব?
ইউটিউব থেকে আয়100%: ইউটিউব থেকে আয়ের প্রধান উৎস হল বিজ্ঞাপন ও ভিডিও ভিউজ । এর অর্থ আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলটিকে বিজ্ঞাপন দাতাদের ব্যবহার করতে দেবেন,এবং পরিবর্তে আপনি তাদের থেকে টাকা বা প্রেমেন্ট পাবেন।
অর্থাৎ আপনার ইউটিউব ভিডিওর শুরুতে বা মাঝে বিজ্ঞাপনদাতারা তাঁদের বিজ্ঞাপন দেখাবেন, যেমন আমরা কোন কিছু ইউটিউবে দেখতে গেলে ৫ মিনিট যাওয়ার পরে যে বিজ্ঞাপন হয়, ঠিক তখনি আপনি ইউটিউব থেকে রোজগার করবেন।
এছাড়া, চ্যানেল মেম্বারশিপ, সুপার চ্যাট, পণ্য বিক্রি, ইউটিউব প্রিমিয়াম ইত্যাদি বিভিন্নভাবেই ইউটিউব থেকে টাকা রোজগার করা সম্ভব হবে আপনার।
ইউটিউব থেকে আয়ের উপায় হল
ইউটিউব থেকে আয়100%: ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে আপনাকে প্রথমেই নিয়ম মোতাবেক একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে। আপনি আপনার জি-মেল অ্যাকাউন্টের সাহায্যে সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই নিজেই নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন। একদম সিম্পল একটা বিষয়?
তবে আপনার ইউটিউব চ্যানেল খুললে এবং লোকে সেই ভিডিও দেখলেই সেখান থেকে আয় হবে না আপনার।
কারণ প্রথমে যেগুলো কাজ করতে হবে আপনাকে সেগুলো কাজ করতে হবে অবশ্যই । তা ভালোভাবে পড়ে নিন কি কি আপনাকে কাজ করতে হবে,
সেগুলো হলো, ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য আপনাকে ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম-এ আপনার চ্যানেলকে নথিভুক্ত করতে হবে আপনার ইউটিউব চ্যানেল।
আপনার চ্যানেল-কে ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে নথিভুক্ত করার পরই ইউটিউব বিভিন্ন বিজ্ঞাপনদাতাদের ভিডিও সেখানে দেবে সেই বিজ্ঞাপন থেকেই আপনি সেখান থেকে টাকা ইনকাম করতে পাবেন।
ইউটিউব পার্টনাশিপ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করার জন্যও আপনাকে কয়েকটি প্রাথমিক শর্ত পূরণ করতে হবে।এবং সেই শর্তগুলি পূরণ হলে শুধুমাত্র তখনই আপনি এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারবেন গুগল এডসেন্স এ।
গুগল এডসেন্স এ আবেদন করতে গেলে আপনাকে যে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
আপনার চ্যানেলে অন্ততপক্ষে ১০০০ জন সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে। ও ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম থাকতে হবে:
১ম দিন থেকে শেষ ১২ মাসে মধ্য আপনার চ্যানেলের ৪,০০০ ঘন্টা পাবলিক ওয়াচ টাইম ও ১০০০ সাবস্ক্রাইব থাকতে হবে।
১০০০ সাবস্ক্রাইব হওয়ার পর এবং ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম হওয়ার পর আপনাকে গুগোল অ্যাডসেন্সে আবেদন করতে হবে যখন গুগোল আপনার সাইট ভিজিট করে দেখবে সব ঠিক আছে ঠিক তখনই আপনাকে তারা গুগল এডসেন্স দেবে তখন আপনাকে যা করতে হবে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে একটি গুগল্ অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট সংযুক্ত থাকতে হবে।
আপনি চাইলে আপনার চ্যানেলর সেটিং থেকে নোটিফিকেশন অন করে রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে এই শর্তগুলি পূরণ হলে ইউটিউব থেকে আপনাকে নোটিফাই করা হবে আপনার চ্যানেলটিকে।
এই শর্তগুলি একবার পূরণ হয়ে গেলেই আপনি ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারবেন যত ভিউ হবে তত টাকার পরিমান বাড়তে থাকবে।
ইউটিউব পার্টনারশিপ প্রোগ্রামে আবেদন করবার প্রক্রিয়া জানতে গুগলের এই নির্দেশাবলী ভালোভাবে পড়ুন
ইউটিউব কত ভিউতে কত টাকা দেয়
ইউটিউব থেকে আয়100%: আপনার ভিডিওর জন্য ইউটিউব থেকে আপনি কতটাকা পাবেন তা বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করবে আপনার ভিডিওর উপর, যেমন ভিডিওর বিষয়, দর্শকের ধরন, দর্শকের ভৌগলিক অবস্থান, দর্শকদের বয়স, ইত্যাদি।
ইউটিউব সিপিএম অথবা কস্ট পার মাইলস/থাউস্যান্ডের হার এবং সিপিসি বা কস্ট পার ক্লিক-এর ভিত্তিতে টাকা দেয় ইউটিউব। একজন ইউটিউবারের সিপিএম রেটও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওঠানামা করে থাকে।
সাধারণত প্রযুক্তি ভিত্তিক চ্যানেলগুলির সিপিএম এর রেট সব থেকে বেশি থাকে। ভারতীয় ট্রাফিক অর্থাৎ আপনার দর্শকরা যদি মূলত ভারতীয় হন সেক্ষেত্রে প্রযুক্তি ভিত্তি ও চ্যানেল-এ আপনরা সিপিএম ৫ ডলার অবধি হতে পারে।
অন্যদিকে শিক্ষাভিত্তিক চ্যানেলগুলির সিপিএম সাধারণত কমের দিকে হয়ে থাকে, কারণ তাদের দর্শকদের বয়স মূলত ১৮ বছরের নীচে থাকে, এই বয়সের দর্শকদের প্রতি বেশিরভাগ বিজ্ঞাপনদাতাদের আগ্রহ কম থাকে।
একটি শিক্ষাভিত্তিক ব্লগ জানাচ্ছে তাদের সিপিএম (CPM) রেট ০.৫০ ডলার থেকে ২ ডলারে মধ্যে ওঠানামা করে থাকে। বিনোদন ভিত্তিক চ্যানেলের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা ১ থেকে ৩ ডলার পর্যন্ত।
অন্যদিকে কস্ট পার ক্লিক হল দর্শক নির্দিষ্ট বিজ্ঞাপনের লিংক-এ লিংকে ক্লিক করলে তার পরিবর্তে টাকা পাওয়া। এটির মূল্য অনেকাংশেই নির্ভর করে বিজ্ঞাপনদাতার প্রোফাইলের ওপর লক্ষ্য করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একবার আপনার চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ১০ লক্ষ ছুঁলে তবেই আপনি ইউটিউব থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রেমেন্ট/টাকা পয়সা আয় করতে পারবেন।
ইউটিউব কিভাবে টাকা দেয়
ইউটিউব থেকে আয়100%: ইউটিউব গুগল্ অ্যাডসেন্স-এর মাধ্যমে টাকা দেয়। প্রতি মাসের ১০ থেকে ১৪ তারিখের মধ্যে ইউটিউব আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাবে গুগল।
আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে ১০ ডলার জমা হলে গুগল্ আপনার ঠিকানায় ডাক মারফৎ একটি কোড পাঠাবে আপনার ঠিকানায়।
আপনাকে আপনার অ্যাকাউন্টে সেই কোডটি ভেরিফাই করাতে হবে আপনাকে। এরপর আপনার অ্যাকাউন্টে ১০০ ডলার জমা হলে গুগল্ আপনার ব্যাঙ্ক / মাস্টার কার্ড অ্যাকাউন্টে আপনার আয় করা টাকা পাঠিয়ে দেবে আপনার কার্ডে।
ইউটিউব থেকে আয়ের টিপস্
একথা পরিষ্কার ইউটিউব ব্যবসায় সাফল্যের মূলমন্ত্র দর্শক সংখ্যা বৃদ্ধি করছে। এমনকি ইউটিউব থেকে আয় শুরু করার জন্যও আপনার ১০০০ জন নিয়মিত দর্শক প্রয়োজন হবে।
এছাড়াও দর্শকের প্রোফাইলের ওপরও নির্ভর করে আয় আসবে আপনার। একজন সফল ইউটিউবার হতে হলে কয়েকটি জিনিস আপনার মাথায় রাখা প্রয়োজন, তা নিচে দেয়া হল:
সঠিক ক্ষেত্র টি বেছে নিন
ইউটিউব থেকে আয়ের প্রাথমিক শর্ত হল সর্বপ্রথম সঠিক ক্ষেত্রটিকে বেছে নেওয়া। নিজের আগ্রহ, পারদর্শিতার ওপর যেমন তা নির্ভর করবে, তেমনই নির্ভর করবে কোন ধরনের দর্শকের কাছে আপনি পৌঁছতে চান তার ওপরও। প্রযুক্তি, বিনোদন, শিক্ষা, খেলাধুলো, লাইফ হ্যাকস্, নিজে করুন, পর্যটন, কৌতুক ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের ইউটিউব চ্যানেল বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করে আসছে।
নিশ্চিত করুন আপনি যে বিষয়ের ওপর ভিডিও করবেন করছেন সেই বিষয়টি আপনার যথেষ্ট জানা আছে আপনার, তাহলেই সেই বিষয় সম্পর্কিত একাধিক সফল ভিডিও আপনি তৈরি করতে পারবেন যা দর্শককে আকৃষ্ট করবে এবং আপনার চ্যানেলের ভিউ বাড়বে।
ইউটিউবারদের প্রাথমিকভাবে ধৈর্য রাখতে হবে
একটি ইউটিউব চ্যানেলের প্রাথমিক ১,০০০ এমন ১০,০০০ হাজার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যায় পৌঁছতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয় ইউটিউবারদের অনেক সময় ও দিতে হয়।
কোনওরকম লাভ না করেই আপনারে একের পর এক ভিডিও বানিয়ে চালিয়ে যেতে হবে আপনাকে, যে পর্যন্ত আপনার ভিডিও না ভাইরাল হয় সে পর্যন্ত আপনাকে পরিশ্রম ও চালিয়ে যেতেই হবে।
পেশাদার মানের ভিডিও বানাতে হবে
ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে ভাল পেশাদার মানের ভিডিও বানাতে হবে।আপনার ভিডিও যতই তথ্য সমৃদ্ধ হোক না কেন, আপনার উপাস্থাপনা ভাল না হলে দর্শক ভিডিওটি পুরো বা ভালোভাবে দেখবে না বা আপনার চ্যানেলে ফিরে আসার জন্য সাবস্ক্রাইব করবে না। তাই আপনাকে ভালো উপস্থাপন ও ভালো মানের ভিডিও বানাতে হবে।
আজ কাল বিভিন্ন স্মার্টফোনেই অত্যন্ত ভাল মানের ক্যামেরা দিয়ে থাকেন স্মার্টফোন কোম্পানিরা, সেই ক্যামেরা ব্যবহার করেও আপনি ভালো মানের ভিডিও বানাতে পারেন। ভিডিও সম্পাদনা ও শব্দ বিন্যাসের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে আপনাকে।
অনেক সময়েই খুব ভাল মানের ভিডিও খারাপ এডিটিং-এর জন্য নষ্ট হয়ে যায় আমাদের কে সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ভিডিও উপস্থাপনার ফরম্যাট সম্পর্কেও যত্নবান হতে হবে, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
কোন ভাষায় ভিডিও করবেন তা নিশ্চিত করুন
আপনি যদি বাংলা ইংরেজি দুটো ভাষাতে ভাল অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে কোন ভাষায় আপনি আপনার ভিডিওটি করবেন বা বানাবেন। ইংরেজি ভাষায় ভিডিও করলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দর্শকের কাছে পৌঁছনোর সুযোগ রয়েছে তখন আপনার চ্যানেল এর ভিউ বেশি হবে,
আবার ভারতের বাইরের বিভিন্ন দেশের ট্রাফিকের ক্ষেত্রে ইউটিউবের টাকার হারও বেশি পাওয়া যায়, অন্যদিকে আবার ইংরেজি ভাষায় প্রতিযোগিতাও অনেক বেশি হয়ে থাকে।
পরিশেষে,মনে রাখবেন
প্রতি মিনিটে ৬০০ ঘন্টারও বেশি ইউটিউব ভিডিও আপলোড হচ্ছে সারা বিশ্বে। আবার ইন্টারনেট ক্রমশ সুলভ হওয়ার বাড়ছে দর্শক সংখ্যাও বেশি। এই তীব্র প্রতিযোগিতার বাজারে ইউটিউব থেকে আয় করতে মেধা, পরিশ্রম ও সৃজন ও শ্রম প্রতিটিই প্রয়োজন হয়।
একবার প্রতিষ্ঠিত ইউটিউবার হয়ে যেতে পারলে আপনাকে আর পিছন দিকে তাকাতে হবে না আস্তে আস্তে আপনিও উপরের লেভেলে উঠে যাবে তখন আপনার ভাল ইনকাম আশা সম্ভব হবে।
তবে তার জন্য পরিশ্রম করতে হবে অনেকটাই বেশি। এছাড়া চাকরির পাশাপাশি বাড়তি রোজগারের জন্যও ইউটিউব একটি ভাল মাধ্যম হয়েছে আজকাল ইউটিউব চ্যানেল।
নতুন কিছু না তৈরি করলেও নতুনভাবে উপস্থাপন করতে পারলে দর্শকের নজর কাড়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে, আর ইউটিউব ব্যবসার সাফল্যের মূল কথাই হল দর্শকের নজরে আসা একটি ইউটিউব চ্যানেল।
সেই জন্য আমাদের ভালো মানের ভিডিও বানাতে হবে দর্শকদের কাছে পরিচিত লাভ করতে হবে।
You must be logged in to post a comment.