মোবাইল ফোন হ্যাং হলে করণীয়

যুগে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিষ্টেমের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে অনেক সময় এই প্রিয় অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা কিছু সমস্যায় পড়ে যাই

মোবাইল ফোনের প্রতি মানুষের নির্ভরতা এতটাই বেড়ে গেছে যে এখন কেউ এই ডিভাইস ছাড়া একটি দিন পার করার কথা ভাবতেও পারে না

 মোবাইল ফোন কিছুক্ষণ ঠিকমত কাজ না করলে অনেকেই অধৈর্য হয়ে পড়ে মোবাইল ফোন একটানা ব্যবহার করতে করতে কখনো তা হ্যাং বা অচল হয়ে যেতে পারে

সাধারণত বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন, গেম ভিডিও মেমোরি ফোনের অনেক জায়গা দখল করে নিলে মোবাইল ফোন হ্যাং হতে শুরু করে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করলে আমরা এর থেকে মুক্তি পেতে পারি

তার আগে চলুন জেনে নিই আমাদের এই প্রিয় অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলটি কেন হ্যাং হয় হ্যাং হতে পারে এমন কি কি কারণ রয়েছে এবং মোবাইল হ্যাং হলে করণীয় কি?

কি কি কারণে মোবাইল হ্যাং হয় ?

. প্রথমত অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল হ্যাং হয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ দেখা গেছে মোবাইলের স্পেস না থাকাঅর্থাৎ আপনি যখন একই সময়ে অনেক গুলি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করেন তখন প্রয়োজনের তুলনায় মেমরি (RAM) কম হলে মোবাইল হ্যাং হয়ে যেতে পারে

. ২য় কারণটিও একই বলতে পারেন যদি আমরা মেমোরি কার্ড (Memory card /External Memory) এর পরিবর্তে ফোন মেমরিতে (Internal Memory/ROM) যথেচ্ছ পরিমাণে অ্যাপ্লিকেশন ইনষ্টল (Install) করি তাহলে  রম (ROM) ফুল হয়ে যায়, আর এই রম ঘাটতির কারণে ফোন হ্যাং হতে পারে

. যদি মোবাইল ফোনের cookies, caches, log files সঠিক সময়ে পরিষ্কার না করা হয় তবে এগুলি মেমোরি জ্যাম করে মোবাইল হ্যাং হওয়ার কারণ হয়ে দাড়ায়

. মোবাইল এর র‍্যাম, রম বা মেমোরি তুলনায় যদি বড় বা ভারি অ্যাপ্লিকেশন বা গেম ব্যবহার করলেও মোবাইল হ্যাং হয়

. মোবাইল ফোনে ভাইরাজ জনিত কারণে বা ব্যাকগ্রাউন্ড এ অন্য কোন অ্যাপ্লিকেশন চালু থাকা অবস্থায় যদি আমরা অন্য কোন অ্যাপ্লিকেশন চালু করি তাহলেও এই সমস্যা হতে পারে বা হ্যাং হয়ে যেতে পারে

এবার আসি মোবাইল ঘন ঘন হ্যাং হলে কি করবেন বা এই সমস্যার সমাধান কি কি রয়েছে চলুন শুরু করা যাক হ্যাং হওয়ার কারণ দেখে হয়তো বুঝতে পেরেছেন কিভাবে সমাধান করতে হবে তারপরেও আমি স্টেপ বাই স্টেপ বলছি জেনে রাখুন কাজে আসবে

মোবাইল ফোন হ্যাং হলে করণীয়

. কোন অ্যাপ ইন্সটল (Install) করার প্রয়োজন হলে সেটা আপনার মেমোরী কার্ডে ইন্সটল (Install) করুন আর যথাসম্ভব চেষ্টা করুন আপনার ফোন মেমোরি ফাঁকা  রাখার

এক কথায় যদি আপনি কোন app install করে থাকেন তাহলে সেটা phone memory তে ইন্সটল না করে memory card রাখুন ফোন মেমোরি ফাঁকা রাখতে পারলেই আপনার ফোন হ্যাং হওয়া থেকে মুক্তি পাবে

. আপনার ফোনে যদি অপ্রয়োজনীয় কোন অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করা থাকে তাহলে সেগুলো আনইন্সটল করে দিন প্রয়োজন ছাড়া অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করে রাখা থেকে বিরত থাকুন

যে অ্যাপ্লিকেশন আপনার প্রয়োজন নাই সেগুলো রেখে কেন অযথা আপনি ফোনের মেমোরি ফুল করে রাখবেন

. আপনার ফোন এর (RAM) যদি  কম হয় বা জিবির না হয়, তাহলে বড় অ্যাপ্লিকেশন গুলো ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন ভারি অ্যাপ্লিকেশন গুলোর পরিবর্তে লাইট অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে পারেন যেমন ফেসবুক লাইট, ইমুলাইট, ফেসবুক মেসেঞ্জার লাইট  ইত্যাদি

. লক্ষ রাখুন ফোনে একই সঙ্গে অনেকগুলো অ্যাপ্লিকেশন চালু আছে কিনা অনেক ফোনে দেখা যায় অপ্রয়োজনীয় কিছু অ্যাপ্লিকেশন ব্যাকগ্রাউন্ড এ চালু থাকে, যার কারণে আপনার ফোনের র‍্যাম(RAM)  ফুল হয়ে যায় 

আর এজন্যে আপনার প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশনগুলো চালু করার সময় আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনটি হ্যাং হয়ে যায়

. সেটিং থেকে স্টোরেজ অপশনে যান এখান থেকে সেখানে কতটুকু মেমোরি খালি রয়েছে এবং ভিডিও, ছবি, অ্যাপস কতটুকু জায়গা দখল করে আছে তা দেখে নেয়ার পর  অপ্রয়োজনীয় ফাইল ডিলিট করে দিন

. এবার ফোনের সেটিং গিয়ে সেখান থেকে অ্যাপস অপশনে যান এবার আপনার ফোনে থাকা  ভারী বা বড় অ্যাপ্লিকেশনগুলো নির্বাচন করুন

সেখান থেকে অ্যাপসের মেমোরি ব্যবহার অপশনে এসডিকার্ড করে দিন এরপর থেকে যে অ্যাপসটি SD কার্ড করে দিলেন সেটি আর আপনার ফোন মেমোরির জায়গা দখল করবে না বা আপনার ইন্টারনাল স্টোরেজ ফুল হবে না এতে করে আপনার ফোন ফ্রি থাকবে, হ্যাং হওয়া থেকে মুক্তি পাবে

. কোন অ্যাপ্লিকেশন যদি অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে তাহলে তো আনইন্সটল করে দিতে পারেনএছাড়াও মোবাইলে থাকে ভিডিও, অডিও, পিকচার ইত্যাদি অপূরণীয় ফাইলগুলো ডিলিট করে মেমোরি কার্ড ফাঁকা করে রাখুন এতে করে অনেক খানি আপনার ফোন হ্যাং হওয়া থেকে মুক্তি পাবে

. অনেক সময় মেমোরি কার্ড বা SD কার্ডের জন্য মোবাইল ফোন হ্যাং হতে পারে তাই হঠাৎ করে ফোন হ্যাং হয়ে গেলে, আপনার মেমোরী কার্ডটি কিছুক্ষণ সময়ের জন্য খুলে ব্যবহার করে দেখতে পারেন

কারণ মেমোরি কার্ডে ভাইরাসজনিত কারণে বা অন্য কোনো কারণে যদি স্লো হয়ে যায়, সেক্ষেত্রেও ফোন হ্যাং করতে পারে

. স্মার্টফোনে বেশি অ্যান্টিভাইরাসের প্রয়োজন হয় না কারণ অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ফোনে আগে থেকেই দেয়া থাকে। তাই অ্যান্টিভাইরাস ইন্সটল না করাই ভালোএতে ফোনের র‍্যাম বেশি ব্যবহার হয়

১০. মোবাইলে ভালো মানের র‍্যাম ক্লিনার ব্যবহার করুন তবে খুব বেশি র‍্যাম ফুল না করার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন

১১. মোবাইল কেনার সময় আপনাকে অন্যান্য ফিচারের পাশাপাশি র‍্যামের দিকে লক্ষ বেশি দিতে হবে বর্তমান সময়ে GB জিবি র‍্যামের নিচে মোবাইল না কেনাই ভালো

১২. একটি অ্যাপ বন্ধ করার সময়, আপনাকে এটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে আপনি যদি হোম বোতাম টিপে এটি বন্ধ করেন তবে এটি পটভূমিতে চলতে থাকবে তাই বেশি সময় লাগলেও, আপনাকে অপশন থেকে এটি বন্ধ করতে হবে

যদি মোবাইল ফোন হ্যাং হয়, তাহলে হোম বাটন চেপে দ্রুত বেরিয়ে আসুন রিসেন্ট থেকে সমস্ত অ্যাপ্লিকেশনের তালিকা সাফ করুন অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সেটিংসে গিয়ে অ্যাপসে যান

সেখান থেকে চলমান অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে যান এবং সমস্ত অপ্রয়োজনীয় চলমান অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করুন।

 আর যদি এমন হয় যে মোবাইল ফোনটা হ্যাং করার পর সাড়া দিচ্ছে না, তাহলে কিছুক্ষণের জন্য মোবাইল ছেড়ে দিন। অপ্রয়োজনে ডিসপ্লেতে এলোমেলোভাবে স্পর্শ করবেন না।

তাহলে আরো খারাপ হবে। এটি কাজ করছে কিনা তা দেখতে 2 মিনিট পর এটি স্পর্শ করুন। যদি না হয়, ব্যাটারি খুলুন এবং এটি আবার চালু করুন।

পরিশেষ,

আশা করি, আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা মোবাইল ফোন হ্যাং করার কারণ এবং এর সমাধান সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। 

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
Recent Articles