ফ্রিল্যান্সিং করে আয় | ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ পাওয়ার ৯টি কার্যকরী পদক্ষেপ।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে এসে আপনারা হয়তো জানেন কাজ পাওয়ার জন্য ও ব্যাবসিয়িক সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য প্রপোজাল ও প্রোপাইলের গুরুত্ব কতটুকু।

এলেখায় আরো বেশি মাত্রাই কাজ পাওয়ার উপযোগি উপায় সমূহ তুলে ধরা হচ্ছে। তাই বন্ধুরা বলা যায় কাজ বিড করার আগে আপনার প্রয়োজন হল উপায়গুলো পড়ে নিজেকে তৈরি করা।নিচে উপায় সমূহ বর্ণনা করা হলঃ

১.ইউনিক প্রোপাইল তৈরি করা।

প্রোপাইলে আপনার অর্জিত সফলতাগুলো তুলে ধরুন। আপনার আগের কাজের অভিজ্ঞতা, কাজ থেকে পাওয়া শিক্ষা, পুরুষ্কার, সাফল্য ইত্যাদি উল্লেখ করেন।যেমন বিখ্যাত কোন পত্রিকায় আপনার লেখ আর্টিকেল, আপনার ডিজাইন করা ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা।

বা আপনি যদি কোন ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যলয় থেকে পড়ালেখা করে থাকেন। এসব কিছুই আপনার কাজের প্রতি দক্ষতা, আগ্রহ,সাফল্য প্রকাশ পায়। 

২.প্রোপাইল ডেসক্রিপশন।

সব বায়ারের আকর্ষণ থাকে সার্ভিস ডেসক্রিপশন এবং কিওয়ার্ড সেকশনের প্রতি। তাই এই দুটি বিষয় সময় নিয়ে পূরণ করেন।আর যদি না পারেন সফল ফ্রিল্যান্সারদের প্রোপাইল গুলো ভলো করে ঘেটে দেখুন।

৩.আদর্শ ক্লায়েন্ট প্রোপাইল তৈরি করা।

সব কাজেই বিড করবেন না। এতে আপনার সময় টাকা সম্মান সব যাবে। দেখেশুনে যেসব কাজ পারবেন তা বিড করবেন।অনেকেই এই ভুলটা করে থাকে। আস্তে আস্তে জবে বিড করতে করতে তৈরি করেন একটি ক্লায়েন্ট প্রোপাইল।

এটি আপনাকে ক্লায়েন্ট সম্পর্কে ধারণা দিবে। আদর্শ ক্লায়েন্টের সার্বিক অবস্থা কি?শিক্ষাগত যোগ্যতা ও আয়ের প্রমাণ।কিধরনের প্রতিষ্ঠানে কাজ করে ।প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিসর কেমন।

এরা কি লাভজনক অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে কাজ করে? কেন আপনি এধরনের গ্রাহকদের সাথে কাজ করতে চান? কি ধরনের কাজ এরা করায়।

এদের বাজেট সীমা কত?একবার যখন আপনি আদর্শ ক্লায়েন্টের ধারণা পেয়ে যাবেন তখন শুধু একদিকে মনযোগী হতে পারবেন। সব কাজ বিড করার প্রয়োজন হবেনা। এতে আপনার সময় বাঁচবে।

৪.স্কিল টেস্ট দেওয়া।

এক সার্ভেতে দেখা গেছে, ৭৭ শতাংশ ক্লায়েন্ট স্কিল টেস্টের রেজাল্ট দেখে এবং ভালো রেজাল্টের অধিকারী ফ্রিল্যান্সারদের তাদের কাজ দেয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এটি প্রায় ৫ জন ক্লায়েন্টের ৪ জনই করে থাকে। তাই যত বেশি সম্ভব স্কিল টেস্ট দেয়া উচিত অবশ্যই আপনার কাজের ক্যাটাগরিতে। এছাড়া ইংরেজি বিষয়ে অনেক ধরনের টেস্ট আছে, সেগুলো বেশি করে দেয়া উচিত।

৫.গ্রুফে জয়েন করা।

ইল্যান্স গ্রুপে জয়েন করার মাধ্যমে আপনার পেশাগত দক্ষতা বিভিন্ন পৃষ্ঠপোষক কোম্পানি, যেমন- এডোবি ফটোশপ, মাইক্রোসফট এক্সেলের মাধ্যমে হয়। গ্রুপে আপনার প্রোফাইল শো করলে আপনাকে বায়ারদের খুঁজে নিতে এটি সাহায্য করবে।

৬.দ্রুত কার্যকর হওয়া।

যখনই আপনি একটি কাজ দেখলেন যেটি আপনার কাজের ক্ষেত্র ও দক্ষতার সাথে মিলে যাচ্ছে, তখনই দ্রুত আপনার প্রপোজাল তৈরি করুন সঠিকভাবে। এরপর বিড করুন। যত দ্রুত রেসপন্স করবেন, আপনার প্রপোজালটি ক্লায়েন্টের চোখে পড়ার সম্ভাবনা ততই বেশি। ক্লায়েন্ট যদি আপনাকে ইন্টারভিউর জন্য ডাকে, তবে দ্রুত সাড়া দাও।

৭.নিজের মর্যাদা বজায় রাখা। 

এখনও পর্যন্ত ইল্যান্সের সার্ভেতে দেখা গেছে, ফিডব্যাক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ৫ স্টার ফিডব্যাক পেতে হলে আপনার কাজটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে, গ্রাহকের সাথে ভালো আচরণ এবং নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। অযথা গ্রাহককে আপনার কোনো কথা বা আচরণ দিয়ে বা গ্রাহক যখন যোগাযোগ করবে তাতে সাড়া না দিয়ে নিজের মর্যাদা নষ্ট করবেন না।

এতে গ্রাহক বিরক্ত হয়ে খারাপ ফিডব্যাক দিতে পারে অথবা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে। ফলে আপনার প্রোফাইলটি হারাতে পারেন চিরতরে।

৮.প্রপোজাল তৈরি করা।

মনে রাখবেন, এখানে আপনার যোগ্যতা প্রতিষ্ঠিত করছেন, তাই ক্লায়েন্টের চোখে এক নজরেই আপনাকে যোগ্য মনে করানোটাই সাফল্যের প্রথম চাবিকাঠি। কাট-কপি-পেস্ট করে প্রপোজাল তৈরি করাটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এটি আপনার প্রতি ক্লায়েন্টদের বিরূপ ধারণা তৈরি করবে। একটি সঠিক প্রোপোজালে যা যা থাকতে হবে- কাজটি সম্পর্কে ক্লায়েন্টের চাহিদা জানা।

ক্লায়েন্টের কোনো সাজেশন জানতে চাওয়া। যদি ক্লায়েন্টের মত অনুযায়ী কাজটির ক্ষেত্র সঠিক না হয়, তবে তা ক্লায়েন্টকে বুঝিয়ে দেয়া। কোন বিষয় পরিবর্তন করলে কাজটি সুন্দর হবে সেই অভিমত দেয়া যায়।

আপনি কীভাবে কাজটি করবেন তার নমুনা দেয়া। কাজটি সম্পন্ন করতে আপনার কতদিন লাগবে। আপনার করা এ ধরনের কাজের উদাহরণ। এই বিষয়গুলো যদি আপনার প্রোপোজালে গুছিয়ে লেখা থাকে তবে ক্লায়েন্ট বুঝবে আপনি কাজ জানেন, ব্যবসায় বোঝেন, তার কাজের জন্য আপনিই উপযুক্ত।

মনে রাখবেন, বায়াররা আপনার থেকে তাদের সমস্যা এবং লক্ষ্য নিয়ে চিন্তা করতে বেশি আগ্রহী। তাই প্রপোজালটি আপনার নিজস্ব কথা দিয়ে না সাজিয়ে ক্লায়েন্টের সমস্যা এবং তার সমাধানের পরিকল্পনা দিয়ে সাজান। যদি আপনি তা করতে পারেন, তবে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল দেখতে আসবে।

৯.সবসময় কানেক্টেড থাকা।

গ্রাহক প্রকল্প সম্পর্কে আপনার বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যেকোনো তথ্য দিয়ে সাহায্য করে প্রকল্প সম্পন্ন করার প্রতিই বেশি আগ্রহী থাকে। তাই গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার কাছে ইন্টারনেট সংযোগসহ মোবাইল থাকে, তাহলে ই-মেইলের মাধ্যমে ইল্যান্সের সাথে সংযুক্ত থাকুন,

যাতে ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইলে মেইল করার সাথে সাথে তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এই নিয়মগুলো যদি আপনি সঠিকভাবে মেনে চলতে পারেন, সাফল্য আপনার হাতে ধরা দেবেই। এখন আপনার কাছে আছে ৮টি দারুণ উপায়। এগুলো কাজে লাগান এবং আরও বেশি কাজ পাওয়ার উপযোগী হয়ে উঠুন।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
Recent Articles