সঠিক ভাবে মোবাইল চার্জ দেওয়ার নিয়ম

কিভাবে মোবাইল চার্জ দিতে হয়। আমাদের মধ্যে প্রায় ৮০% স্মার্টফোন (smartphone) ইউসার একটি “Android device” ব্যবহার করেন। এবং, এই এন্ড্রয়েড ব্যবহার কারীদের মধ্যে ৭০% লোকেদের মোবাইলের ব্যাটারি কেবল ১ বছরের ভেতরেই নষ্ট হয়ে যায়।

মোবাইলের ব্যাটারী ভালো রাখার উপায়

তাই, “মোবাইলের ব্যাটারি ভালো রাখার উপায়” করার জন্য, প্রথমেই আপনার “সঠিক ভাবে মোবাইল চার্জ দেয়ার নিয়ম” গুলি জেনেনিতে হবে। (How To Charge Your Mobile Properly).

কারণ, আপনার স্মার্টফোনের ব্যাটারি ভালো রাখার জন্য, আপনি আপনার মোবাইল কিভাবে চার্জ করছেন, সেই বিষয়টি নিয়ে বিশেষ ভাবে ধ্যান দিতেই হবে।

কেননা, বেঠিক (improper) ভাবে মোবাইল চার্জ করলে, মোবাইলের ব্যাটারিতে অধিক বেশি ছোট পরে।

ফলে, অনেক দ্রুত ভাবে আপনার মোবাইলের ব্যাটারী খারাপ হয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক।

মোবাইল চার্জ দেওয়ার সঠিক নিয়ম না জেনেই, “বেঠিক” ভাবে স্মার্টফোন চার্জ দেয়ার ফলে, “হঠাৎ মোবাইলের চার্জ কমে যাওয়া“ “মোবাইলের ব্যাটারী ফুলে যাওয়া”

এবং “নিজে নিজে চার্জ শেষ হয়ে যাওয়া এবং কিছু ক্ষেত্রে আরো সাংঘাতিক ব্যাটারী সমস্যা দেখা দিতে পারে।

তাই, একটি স্মার্টফোনের ব্যাটারি অনেক বেশি সময়ের জন্য ভালো রাখার জন্য, সঠিক ভাবে মোবাইল চার্জ দেয়ার নিয়ম কিছু আপনার জেনে রাখতে হবে।

তাছাড়া, একটি মোবাইল চার্জ করার সময় আমরা অনেক ধরণের ভুল কাজ করে ফেলি, যেগুলি করা আমাদের বন্ধ করতেই হবে।

সঠিক ভাবে মোবাইল চার্জ দেওয়ার নিয়ম 

একটি smartphone নতুন থাকা অবস্থায়, তার অনেক যত্ন আমরা নেই, কিন্তু কিছু দিন পুরোনো হলেই, তার যত্ন করাটা আমাদের প্রয়োজন অনুভব হয়না।

এটাই কারণ যে, সময় যেতে যেতে অনেক কম সময়ের ভেতরে আমাদের মোবাইল ও মোবাইলের ব্যাটারীর অবস্থা অনেক খারাপ হতে থাকে।

তাই, আপনি যদি নিজের মোবাইলের ব্যাটারির ক্ষমতা চিরকাল ভালো করে রাখতে চান এবং চাননা যে ব্যাটারীর সাথে জড়িত কোনো রকমের সমস্যা আপনার মোবাইলে দেখা দেয়, তাহলে “কিভাবে সঠিক ভাবে মোবাইল চার্জ করতে হয়” সেই বেপারে সম্পূর্ণ জেনেনিন।

সঠিক ভাবে মোবাইল চার্জ দেয়াটাই “মোবাইল ফোনের ব্যাটারি ভালো রাখার একমাত্র উপায়“.

নিচে, স্মার্টফোন চার্জ দেয়ার কিছু নিয়ম আমি আপনাদের বলে দিচ্ছি এবং তার সাথেই, মোবাইল চার্জ দেয়ার সময় কোন জিনিস গুলি কখনো করবেননা, সেটাও আমি বলে দিবো।

১. আমি মোবাইল কখন চার্জে দিবো?

একটি স্মার্টফোন চার্জে দেয়ার সঠিক সময় তখন, যখন ব্যাটারীতে ৫০% থেকে কম পরিমানে চার্জ থাকবে।

মোবাইলে ৫০% থেকে ৯০% ভেতরে চার্জের পরিমান বজায় রাখাটা অনেক ভালো।তাই, যখনি চার্জের পরিমান ৫০% থেকে কমে যাবে, তখনি চার্জ দিতে হবে মোবাইল।

তাছাড়া, মনে রাখবেন, ৯০% -৯৫% থেকে বেশি চার্জ দিবেননা।

হে, ৯০% ব্যাটারী চার্জ হয়ে যাওয়ার পর ধ্যান দিয়ে চার্জার খুলে দিবেন।

এভাবে, কখন মোবাইল চার্জ দিবেন, সেই ব্যাপারটায় অল্প ধ্যান রাখলেই, মোবাইলের ব্যাটারির স্বাস্থ্য অনেক ভালো থাকবে।

২. চার্জের পরিমান ২০% থেকে কমতে দিবেননা 

আমি জানি, Pubg খেলা, YouTube videos দেখা, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ভিজিট করা এবং অন্যান্য অনেক ধরণের কাজ করতে করতে, মোবাইল চার্জ দেয়ার কথাটা আপনার মনে থাকেনা।

তাইতো ?

কিন্তু, যখন হটাৎ করে “low battery signal“, মোবাইলের দ্বারা আমাদের দেখানো হয়, তখন তার একটাই মানে, “মোবাইলের ব্যাটারিতে ২০% চার্জ বাকি রয়েছে“.

কিন্তু, আমরা মোবাইলে গেম খেলতে বা ভিডিও দেখাতে এতটাই ব্যস্ত (busy) থাকি যে, মোবাইলের চার্জ ২০% থেকেও আরো অনেক বেশি পরিমানে কমে যায়। 

এবং, এভাবেই ৫৫% লোকেরা নিজেদের মোবাইলের ব্যাটারির কার্য্য ক্ষমতা দিনের পর দিন নষ্ট করতে থাকেন।মনে রাখবেন, যখন মোবাইলের ব্যাটারির চার্জ ২০% থেকেও কম থাকে, তখন সে অনেক ক্ষেত্রে কমজোর (weak) হয়ে থাকে। 

তাই, যখন আমরা দিনের পর দিন ২০% থেকেও কম চার্জ থাকা অবস্থায়, ভারী ভারী গেমস (games) বা apps মোবাইলে ব্যবহার করি, তখন নিঃসন্দেহে, ব্যাটারিতে ছোট পড়াটা নিশ্চিত।

তাই, অনেক বেশি সময়ের জন্য, মোবাইলের ব্যাটারী ভালো রাখার প্রথম উপায় এটাই যে, “মোবাইল ফোনে থাকা চার্জের পরিমান ২০% থেকে কম হতে দিবেননা“.

তাছাড়া, ২০% থেকে কম পরিমানে চার্জ থাকলে, মোবাইল ব্যবহার করবেননা।

৩. আমি কি সম্পূর্ণ ১০০% ব্যাটারী চার্জ করবো ?

না, তবে দিলেও সব সময় ১০০% অব্দি চার্জ দিবেননা।

বিভিন্ন মোবাইল এক্সপার্টস (mobile experts) রা বলেছেন যে, যেকোনো স্মার্টফোনে সম্পূর্ণ ১০০% চার্জ না দিয়ে, ৯০% থেকে ৯৫% অব্দি চার্জ দিলে, মোবাইল ব্যাটারির স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

তবে, মাসে একবার সম্পূর্ণ ০% থেকে ১০০% ফুল চার্জ দেয়ার প্রক্রিয়া করাটাও অনেক ক্ষেত্রে ব্যাটারির জন্য ভালো বলে প্রমাণিত হয়েছে।

এই প্রক্রিয়ার সাহায্যে “battery recalibrate” হবে এবং ফলে, android OS আবার আপনার মোবাইলের সঠিক battery level দেখাতে সক্ষম হবে।তবে, কেবল মাসে ১ থেকে ২ বার সম্পূর্ণ ০% থেকে ১০০% দিবেন।

তার থেকে বেশি না।

একটি smartphone নতুন থাকা অবস্থায়, তার অনেক যত্ন আমরা নেই, কিন্তু কিছু দিন পুরোনো হলেই, তার যত্ন করাটা আমাদের প্রয়োজন অনুভব হয়না।

৪. মোবাইল চার্জে দিয়ে ব্যবহার করবেননা 

একটি স্মার্টফোন যখন চার্জে দেয়া হয় তখন সেটা কখনোই ব্যবহার করার পরামর্শ আমি দেবোনা।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, স্মার্টফোন চার্জে দিয়ে গেম খেলার সময় বা ফোন চার্জে দিয়ে অন্যান্য কাজ করার সময় অনেক মোবাইলের ব্যাটারিতে বিস্ফোরণ (blast) হয়েছে।

আমার উদ্দেশ্য আপনাদের ভয় দেখানো নয়।

তবে, ইন্টারনেটে আপনারা এই ধরণের মোবাইল বিস্ফোরণের খবর অনেক দেখতে পাবেন।

আসলে, মোবাইল চার্জে থাকা অবস্থায় যখন ব্যবহার করা হয়, তখন মোবাইলের ডিসপ্লে, প্রসেসর এবং অন্যান্য অংশতে, ব্যাটারির থেকেই power ব্যবহার হতে থাকে।

এতে, ব্যাটারির চার্জের বর্তমান ব্যবহার এবং চার্জারের সরবরাহ (supply) করা চার্জের পরিমানের মাঝে প্রতিযোগিতার (competition) এর সৃষ্টি হয়। 

ফলে, মোবাইলের ব্যাটারী সাংঘাতিক বেশি পরিমানে গরম হয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে।

এবং, এই “battery overheating” এর ফলেই, আপনার মোবাইলের ব্যাটারী অনেক কম সময়ের মধ্যে খারাপ হয়ে যাওয়ার সুযোগ অনেক বেশি।

ব্যাটারী চার্জ না হওয়া, ব্যাটারী খারাপ হয়ে যাওয়া, ব্যাটারী অনেক আস্তে আস্তে চার্জ হওয়া, এই সব গুলো ব্যাটারির সাথে জড়িত সমস্যা “battery overheating” এর জন্য হওয়া দেখা গেছে।

তাছাড়া, battery overheating এর হলে “মোবাইলে বিস্ফোরণ” হওয়ার কথাটাও মিথ্যে নয়।

তাই, মোবাইল চার্জ দেয়ার নিয়ম গুলির মধ্যে, “চার্জে দেয়ার সময় মোবাইল ব্যবহার না করার এই নিয়মটি কিন্তু সাংঘাতিক জরুরি”।

৫. Battery optimization apps ব্যবহার করুন।

আমাদের এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে প্রায় প্রত্যেক সময়, কিছু না কিছু apps কাজ করতেই থাকে।

তাছাড়া, অনেক background functions, যেগুলির কোনো দরকার নেই, মোবাইলের চার্জ ব্যবহার করতে থাকে।

তাই, অনেক রকমের ভালো android mobile battery optimization apps রয়েছে, যেগুলি ব্যবহার করে আপনি background এ ব্যবহার হওয়া চার্জের পরিমান কমিয়ে দিতে পারবেন।

তাছাড়া, ব্যাটারী গরম হয়ে গেলে ঠান্ডা করতেও এই ধরণের apps সাহায্য করবে।

এতে, মোবাইলের চার্জ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাওয়া সমস্যা থেকে আপনারা মুক্তি পাবেন এবং ব্যাটারির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

ব্যাটারির স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আপনারা নিচে দেয়া battery optimization apps ভ্যাবহার করতে পারবেন।মোবাইল ফোনের ব্যাটারি ভালো রাখার জন্য এই ধরণের এপস ব্যবহার করাটা লাভজনক হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

৬. পুরো রাতের জন্য মোবাইল চার্জে লাগিয়ে রাখবেন না।

নিয়ম মেনে চললে, সম্পূর্ণ রাতের জন্য মোবাইল চার্জে লাগিয়ে রাখাটা কিন্তু ব্যাটারির জন্য অনেক খারাপ।

ভাবুন দেখি, আপনার খিদে পেলে আপনি একটি থাকে কত টুকু ভাত খান।

এখন, আপনাকে যদি আপনার প্রয়োজনের থেকে বেশি ভাত খাওয়ানো হয়, তাহলে কি হবে।

ঠিক এক রকমের ব্যাপার মোবাইলের ব্যাটারির সাথে।

ব্যাটারিতে যতটুকু চার্জের প্রয়োজন, তার থেকে বেশি পরিমানে চার্জে দিয়ে রাখলে স্বাভাবিক ভাবে ব্যাটারিতে তার খারাপ প্রভাব পড়বে এবং চার্জের সাথে সংশ্লিষ্ট (related) অনেক ধরণের সমস্যা মোবাইলে দেখা দিবে।

তাই, যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই চার্জ দেয়ার চেষ্টা করবেন।

তাছাড়া, সম্পূর্ণ রাতের জন্য মোবাইল চার্জে লাগিয়ে রাখবেননা।

৭. আমি কি যেকোনো চার্জার বা পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করবো?

না, এটা কখনোই করবেননা যদি আপনি নিজের মোবাইল ফোনের ব্যাটারির আয়ু বাড়াতে চান।

হে, হঠাৎ কোনো চাড়া (urgency) থাকলে বা চার্জার খুঁজে পাচ্ছেননা, তখন অন্য একটি একটি ভালো চার্জার ব্যবহার করাটা স্বাভাবিক।

তবে, অনেক বেশি সময়ের জন্য কোনো “low quality mobile charger” এর ব্যবহার, আপনার মোবাইলের ব্যাটারিকে সাংঘাতিক ক্ষতি প্রদান করতে পারে।

অনেক ক্ষেত্রে পাওয়া গেছে যে, কমদামি এবং কিছু সস্তা চার্জার ব্যবহার করার ফলে, অনেক মোবাইলের ব্যাটারিতে আগুন পর্যন্ত লেগে উঠেছে।

তাই, যতটা সম্ভব নিজের মোবাইলের সাথে দেয়া চার্জার ব্যবহার করবেন।

তবে, চার্জার খারাপ হয়ে গেলে, মোবাইল কোম্পানির সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে একটি অরিজিনাল চার্জার কেনার পরামর্শ আমি দিবো।

মোবাইলের ব্যাটারী ভালো রাখার জন্য, এই নিয়ম মেনে চলাটা সবাইর জন্য অনেক জরুরি।

শেষ কথা,

তাহলে বন্ধুরা, আমাদের মধ্যে অনেকেরি, মোবাইলের চার্জ এবং মোবাইলের ব্যাটারির সাথে সংশ্লিষ্ট অনেক ধরণের সমস্যা রয়েছে। তবে, ওপরে আমি বলা ৭ টি নিয়ম মেনে মোবাইল চার্জে দিলে, নিঃসন্দেহে, অনেক বেশি সময়ের জন্য ব্যাটারী ভালো থাকবে। 

তাছাড়া, মোবাইলে চার্জের সাথে রিলেটেড কোনো সমস্যা আপনার থাকবেনা।

তাই, মোবাইল চার্জে দেয়ার নিয়ম গুলি প্রয়োগ করুন এবং চিরকাল নিজের স্মার্টফোনের ব্যাটারি ভালো রাখুন। 

প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা যদি কেউ লেখালেখি করে ইনকাম করতে চান তাহলে seniorbd.com এ লেখালেখি করে ইনকাম করা যায়। কিভাবে আপনারা লেখালেখি করে ইনকাম করবেন তা বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করে দেখুন।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
Recent Articles