কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা কতটা ব্যায়বহুল হতে পারে।

কোভিড-১৯ পৃথিবীতে এসেছে একটি সংক্রামক রোগ হিসাবে। যাকে বলে একজন থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়ায়।যার কারনে অনেক সময় কমিউনিটি আক্রান্ত হয়।

যার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অনেকটাই জটিল। কারণ মানুষের প্রয়োজনে মানুষ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যায়।তখন অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় স্বাস্থ্যবিধি লংঘিত হচ্ছে। এর সমাধান বড়ই জটিল। 

দিন, দিন আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এক জায়গায় কমছে অন্য জায়গায় বাড়ছে। মানুষ হিমশিম খাচ্ছে এটা নিয়ন্ত্রনে।

মানুষের উপার্জন কমছে। পাশাপাশি আক্রান্ত হলে চিকিৎসাও সাধ্যের মধ্যে থাকছেনা।সরকারি পর্যায়ে হোক আর প্রাইভেট ভাবে হোক, সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা হয় কারণ আক্রান্তের অনেক।

দেখা যাচ্ছে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত রোগী স্বাভাবিক চিকিৎসাতেই সেরে উঠছে। সেরে উঠার হারই বেশি। কিন্তু মৃত্যু বলে বলে কথা। প্রতি এক হাজার জনে দুই জনও যদি মারা যায় ওটা হয়ে যায় দৃশ্যমান মৃত্যু। তায় এটা কাম্য নয়।

মূল বিষয়ে যাওয়া যাক।কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর দেহের কোথায়, কোথায় আক্রমণ করে। এবং সে সমস্ত বিষয় নির্নয়ন করতে এবং চিকিৎসা করতে আসলেই একটা ব্যায়বহুল প্রক্রিয়া। 

শরীরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এর আক্রমণ হয়।ফুসফুস, রক্ত, এবং কিডনি। আর এ তিনটি জায়গার অবস্থা নির্নয়ে কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষার প্রয়োজন হয়।বিশেষ করে সিভিয়ার রোগীর ক্ষেত্রে।

একজন কোভিড-১৯ রোগীর লক্ষন থেকে শুরু করে এবং  যিনি গুরুতর আক্রান্ত তার ক্ষেত্রে যে সমস্ত পরীক্ষার দরকার হয় নিচে অল্প পরিসরে আলোচনা করলাম। 

কি, কি করলে ভালো হয়।বিশেষ করে সিলভিয়ার রোগীর জন্য। 

(১) আর,টি,পি,সি,আর টেস্ট

এই টেস্ট তখনই করতে হয় যদি রোগীর মধ্যে কোভিড-১৯ এর লক্ষন বিদ্যমান থাকে।যেমন ঠান্ডা, কাশি,জ্বর ইত্যাদি। 

এই টেস্টের জন্য তুলা যুক্ত একটা স্টিকের সাহায্যে, গলা থেকে এবং নাকের গোড়া থেকে লালা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করে বুঝতে হয় নেগেটিভ, নাকি পজেটিভ।

আর,টি,পি,সি,আর-এটাকে বলে রিয়াল টাইম পলিমারেস চেইন রি-এ্যাকশন।

(২)আইএল-৬

এই টেস্টের মাধ্যমে রোগীর ফুসফুসের অবস্থা নির্নয় করা হয়।আইএল-৬ এর মাত্রা বেড়ে গেলে রোগী মৃত্যু ঝুঁকিতে থাকে।এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট। 

(৩)এইচ,আর সিটি স্কানিয়া

এই পরীক্ষাটাও ফুসফুসের অবস্থা দেখার জন্য করা হয়।কেউ করোনা থেকে সেরে উঠার পরেও কিছু লক্ষন যেমন এ্যাজমা,কাশি থাকে তাদের জন্য। এই পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝা যায় নিউমোনিয়া হবার সম্ভাবনা আছে কিনা। 

(৪)ডিম,ডাই মর টেস্ট 

রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে এই টেস্ট করতে হয়। 

(৫)এস,ক্রিয়েটিনিন 

কোভিড-১৯ রোগীর জন্য এই পরীক্ষাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কোভিডে আক্রান্ত রোগীর কিডনি ফেইলিউর হতে পারে। 

এই টেস্টের মাধ্যমে জানা যায় রক্তে ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ বেড়ে গেছে কিনা।

(৬)আর,বি,এস

রক্তে সুগারের লেবেল জানতে এই টেস্ট করতে হয়। কারো ডায়াবেটিস আছে কিনা জানতে। 

(৭)ফেরোটিন

কোভিড-১৯ রোগীর আরেকটি সমস্যা হতে পারে তার হলো শরীরে আয়রনের পরিমাণ কমে যাওয়া। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। 

এই টেস্টের মাধ্যমে জানা যায় আয়রনের পরিমাণ কি আছে আর রোগ প্রতিরোধ ব্যাবস্থা কতটা কার্যকর আছে। 

(৮)প্রোক্যালসিটোনিন

ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন বুঝতে এই টেস্ট করতে হয়। রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হলে এই টেস্ট করা হয়। 

(৯)সি,আর,পি

আসলে সি,আর,পি টেস্ট নির্দিষ্ট কোন রোগের জন্য করা হয়না।এই টেস্ট শরীরের অনেক কিছু বুঝতে করা হয়। সংক্ষেপে চলমান কোন সংক্রমণ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি আছে কিনা জানতে করা হয়।

(১০)সি,বি,সি

সি,বি,সি এমন একটি পরীক্ষা যাকে বলা হয় টেস্ট প্রোফাইল। ব্লাড সেল রক্ত কনি কর কাউন্ট করা হয়।রক্ত কনিকা কোন পর্যায়ে আছে বুঝতে এই টেস্ট করা হয়। 

মোটামুটি একটা আলোচনা হলো।এখন দেখার বিষয় যারা বাসায় থেকে স্বাভাবিক ভাবে সেরে উঠছে তাদের করণীয় কি?

যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে তারা এই টেস্টগুলো করতে পারেন। যাদের এ্যাজমার সমস্যা আছে ঠান্ডার সমস্যা আছে তারা করতে পারেন। যেমন

আয়রনের পরিমাণ কেমন আছে শরীরে, কিডনির সমস্যা হয়েছে কিনা, নিউমোনিয়া হবার সম্ভাবনা আছে কিনা (যাদের এ্যাজমা এবং ঠান্ডা জনিত রোগের সমস্যা আছে) সি,আর,পিটা করতে পারেন। 

তবে কোন পরীক্ষায় ডাঃ এর পরামর্শ ব্যাতিত নয়।অযথা নয়।

সবাই ভালো থাকবেন,সাবধানে থাকবেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। 

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
Recent Articles