অপরাধ ও কিশোর অপরাধ

অপরাধ: অপরাধ হল, কোন সমাজের রীতিনীতি, আইন-কানুন, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি এর বিপরীত ধর্মী আচরণ। যার ফলে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অকল্যাণ বয়ে আনে। এক কথায়, অপরাধ হল বিচ্যুতি আচরণ। 

কিশোর অপরাধ 

কিশোর অপরাধ হল, কোন শিশু বা কিশোর দ্বারা যে সব অপরাধ সংঘটিত হয় সেই সব অপরাধকে কিশোর আলোর বলে। ১৪ বছর বয়স থেকে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু বা কিশোররা বেশিরভাগ কিশোর অপরাধে জরিয়ে পরে।

কিশোর অপরাধে কারণ 

আমাদের সমাজের ভবিষ্যত হল আমাদের দেশের কিশোর কিশোরীরা। কিন্তু আমরা এতটাই ব্যস্ত হয়ে পরেছি যে আমাদের নিজেদের সন্তান এর খোঁজ আমরা নিজেরাই রাখতে পারি না। কিশোর অপরাধ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারন নিম্নে ব্যাখ্যা করা হল:                         

১. পারিবারিক কলহ: যে সব পরিবারে স্বামী স্ত্রী এর সাথে কোন রকম মিল থাকে না। সর্বদাই চিল্লাচিল্লি ও ঝগড়া হয় যার ফলে বাবা মা তাদের সন্তান এর প্রতি কোন রকম খেয়ালই দিতে পারে না সেই সব শিশু বা কিশোর কিশোরীরা অপরাধ জীবন বেছে নেয়।                                                                       

২. দারিদ্রতা : শিশু বা কিশোরদের অপরাধ জগতে যাওয়ার আরেকটি অন্যতম কারন হল দারিদ্রতা। অধিকাংশ শিশু বা কিশোররা দারিদ্রতার কারনে বাজে পথে চলে যায়। কারন তারা খুব ছোট বেলা থেকেই অভাব দেখে আসে।                                                       

৩. আধুনিকতার ছোয়া : বর্তমান সমাজ এর আধুনিকতার ছোয়া অতি মাত্রায় গ্রাস করছে সমাজ এর কিশোর কিশোরীদের। তারা সোশ্যাল মিডিয়াতে নানা ভাবে জরিয়ে যাচ্ছে। যেমন:- টিকটক, লাইকি, ফেসবুক গ্রুপ, ইমো এবং ওয়াটরস এপ ইত্যাদি। এই সব প্লাটফর্ম কিশোর অপরাধে মূল চাবিকাঠি।

মাদকাসক্ত : কিশোর অপরাধ এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারন হল মাদকাসক্ত সমাজ। এই অসভ্য সমাজের মধ্যেই তারা বেড়ে উঠে এবং নানা রকম মাদকের উপর মাদকাসক্ত হয়। যার ফলে নানা রকম অপরাধে জড়িয়ে পরে।                                                       

৪. সুশিক্ষার অভাব : সমাজে শিক্ষার মূল্য দিনকে দিন কমেই যাচ্ছে। যার ফলে শিশুরা সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর এই শিক্ষার অভাবেই তারা নানা অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পরছে।

৫. রাজনৈতিক কারন : রাজনৈতিক অনেক সার্থকতার জন্য শিশু বা কিশোরদের নানা রকম প্রলোভন দেখিয়ে অপরাধ জগতে নিয়ে যায়। যার ফলে রাজনৈতিক কারনকেও বিশেষ কারন হিসেবে বলা যেতে পারে।

৬. শক্তির অপব্যবহার : শিশু বা কিশোরদের একটি বয়স সন্ধি কালে নানা রকম আত্যসম্মান বোধ চলে আশে। যাখানে তারা নিজেদের শক্তি প্রয়োগ করে। আর নিজেদের শক্তি প্রয়োগ করতে গিয়ে নানা রকম অপরাধে জড়িয়ে পরে।                                                       

৭. সভ্য বিনোদনের অভাব : সভ্য বিনোদনের অভাব এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমি মনে করি। সভ্য বিনোদনের কারনে অনেক শিশু বা কিশোর নিজেদেরকে সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে পারে। সমাজের রীতিনীতি ও সংস্কৃতিতে নিজেকে ভরে তুলতে পারে। তাই সভ্য বিনোদনের অভাব তাদেরকে গ্রাস করছে।                 

৮. অবহেলা : শিশু বা কিশোরদের প্রয়োজন মত গুরুত্ব না দিলে তারা সঠিক পথ অনুসরণ করতে পারে না। আর অবহেলার মূল মাধ্যম হল পিতা মাতা। তখন শিশু বা কিশোররা তাদের নিজেদের ইচ্ছে মত চলা ফেরা করার চেষ্টা করে।                                                                 

৯. অতিরিক্ত শাসন : অতিরিক্ত শাসন বা অবিচারও হল কিশোর অপরাধ এর গুরুত্বপূর্ণ কারন। আমরা জানি শিশু বা কিশোররা হয় কোমল মনের। তাদেরকে ছোট খাটো ভুলের জন্য অতিরিক্ত কঠোরতা দেখান তাদের জন্য সহনিয় হয়ে উঠে না, বরং তারা তাদেরকে শত্রু মনে করে। যার ফলে তারা নানা রকম অপরাধে জড়িয়ে পরে।                                                                                                

১০. আধিপত্য বিস্তার : এখন কার শিশু বা কিশোরদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার এর একটি মনভাব গড়ে উঠেছে। তারা সমাজে নিজেদের আধিপত্য দেখাতে চায়। যার ফলে তারা মারামারি, লুটপাট, মানব পাচার, খুন ও চাদা বাজি ইত্যাদি অপকর্মের দিকে ধাবিত হয়।                                                                 

আমরা সামাজিক জীব। আমরা চাই আমাদের সমাজ সুন্দর হক। আমরা চাই সমাজের সকল মানুষ সামাজিক সকল নিয়ম-কানুন, রীতিনীতি, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি মেনে চলুক। সমাজে যে ভাবে অপরাধ বেড়েই চলছে এই ভাবে বাড়তে থাকলে খুব তারাতারি সমাজ ধ্বংসের পথে যাবে।

আমরা সব সময় সবার প্রতি শোহন শিল হব। শিশু বা কিশোররা যাতে সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে সেই দিকে আমাদের সকলকে নজর রাখতে হবে।

সমাজ কাঠামো কি ভাবে শক্ত করে গড়ে তুলা যায় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সমাজের অন্যায় এর বিরুদ্ধে রুখে দ্বারাতে হবে। মানুষদের সচেতন করে তুলতে হবে। সামাজিক রীতি মালাকে সঠিক ভাবে প্রয়োগ করতে হবে।

যেখানেই অপরাধ দেখব সবাইকে এক জোট হয়ে অপরাধ এর বিরুদ্ধে শক্ত ভাবে দ্বারাতে হবে। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে রক্ষা করতে হবে।

নিজ নিজ উদ্যোগে সবার পাশে সবাইকে দ্বারাতে হবে। ভালবাসা ছড়য়ে দিতে হবে সকলের মাঝে। 

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
Recent Articles