কাবিলার আসল পরিচয় (Bachelor Point)

সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচিত নাম কাবিলাকে তো আপনারা সবাই চিনেন দর্শক বাংলা সিনেমার কাবিলা নয় । ব্যাচেলর পয়েন্ট নাটকের কাবিলার কথা বলছি যার আসল নাম জিয়াউল হক পলাশ । ছোটকাল থেকেই স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে কোন একজন গুণী নির্মাতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার।

যার মাঝে কখনোই ছিলো না অভিনয় করার ইচ্ছা কিংবা স্বপ্ন । সেই তিনি ২০১৩ সালে এক বড় ভাইয়ের অনুরোধ রাখতে গিয়ে কাকতালীয়ভাবে হয়ে গেছেন বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একজন তরুণ অভিনেতা । ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছেন।

সর্বোচ্চ ৩০ টি কিন্তু তাতেই তিনি নাট্য পাগল তরুণ দর্শকদের মনে যে সাড়া ফেলতে পেরেছে তা অনেক অভিনেতা পারেননি তাদের পুরো ক্যারিয়ারে ।নাজনীন হাসান চুমকী এর পরিচালনায় জার্নি বাই লঞ্চ নাটক চেয়ে যথেষ্ট সমালোচিত হওয়ার পরও সেই নাটক থেকে উঠে এসেছেন নোয়াখালীর এই অভিনেতা ।

ছোটকাল থেকেই যে ছেলেটা নির্মাতা হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন সেটাই হুট করে কিভাবে হয়ে গেলেন একজন জনপ্রিয় অভিনেতা । ১৯৯৩ সালের ২৩ রা ফেব্রুয়ারি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের পূর্ব কালিকাপুর গ্রামের এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অভিনেতা জিয়াউল হক পলাশ পলাশ ।

তবে সম্প্রতি তিনি তাঁর অভিনীত ব্যাচেলর পয়েন্ট নাটকের কল্যাণে কাবিলা নামে পরিচিতি লাভ করেছেন । তার পিতা মুজিবুল হক পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার । কিছুদিন আগেই পলাশ তিতুমীর কলেজ থেকে ফাইনান্স এবং ব্যাংকিং বিষয়ে অনার্স কমপ্লিট করেছেন।

এর আগে তিনি ২০১০ সালে গভমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস ও ২০১৩ সালে এইচএসসি পাস করেন পলাশ তার মা-বাবাকে খুব ভালোবাসেন সময় পেলেই মা-বাবার সাথে আড্ডা দেন তিনি ব্যক্তি জীবনে পলাশের বন্ধু বলতে এখন মিডিয়ার সহকর্মীরাই । তাদের সাথেই মেতে থাকেন সব সময় ।

ব্যাচেলর পয়েন্টে কাবিলা রোকেয়া থাকলেও বাস্তবে কোনো রোকেয়া আছে কিনা তা সঠিক জানা যায়নি । তবে গুঞ্জন আছে পলাশ লুকিয়ে প্রেম করছেন কোন একজন সহ-অভিনেত্রীর সাথে পলাশ কালিকাপুর গ্রামের সন্তান হলেও তিনি তার শৈশব-কৈশোর কাটিয়েছেন ঢাকার নাখালপাড়ায় ।

সেখানে তিনি ছোটকাল থেকেই প্রচুর নাটকের শুটিং দেখে আসছেন । তবে তার পরেও তার মাঝে কখনোই অভিনয় স্বপ্ন জাগে নি বরং সব সময় স্বপ্ন জাগত নিজে কিছু করে দেখাবার । একজন নির্মাতা হয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার । সেই আগ্রহী তাকে পরিচয় করিয়ে দেয় ।

পরবর্তীতে গুরু বনে যাওয়া ইষ্টিয়াক আহমেদ এর সাথে তারপর থেকেই তার জার্নি শুরু দীর্ঘদিন পলাশ ইশতিয়াক আহমেদের সাথে কাজ করেন তাতেই তিনি ইতিমধ্যে নাম লিখে ফেলেছেন সহ পরিচালক হিসেবে নির্মাতা থেকে অভিনয়ে আসাটা পলাশের জন্য ছিল একটা কাকতালীয় ব্যাপার ।

কোনো এক নির্মাতা বড় ভাইয়ের প্রস্তাব পেয়ে থাকেন না করতে না পেরে পলাশ অভিনয় করেছিলেন ট্যাটু নাটকে । অভিনয় সময়ও তিনি সেটা নিয়ে খুব একটা এক্সাইটেড ছিলেন না কিন্তু পরবর্তীতে নাটকটি টিভি চ্যানেলে প্রচারের পর পলাশ দারুন রেসপন্স পেতে থাকেন যা তাকে বিমোহিত করে ফেলে ।

যদিও এর আগেও তিনি কিছু নাটকের ছোট ছোট কিছু কাজ করেছিলেন । তবে তার পর থেকেই অভিনয়ের প্রতি বেশ আগ্রহের জন্ম হয় । এটা ছিল ২০১৩ সালের ঘটনা তারপর নাজনীন হাসান চুমকী পরিচালনায় জার্নি বাই লন্স ধারাবাহিক নাটকের অভিনয় মাধ্যমে তিনি সকলের মাঝে পরিচিতি লাভ করেন ।

তাঁর পরিচালিত প্রথম নাটক ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিট তার অভিনীত নাটকগুলো হলো ব্যাচেলর পয়েন্ট, ট্যাটু তিন , একটি সন্দেহের গল্প , জাস্ট চিল , ইনভাইটেশন , পাসপোর্ট , ব্যাচেলার ঈদ , ব্যাচেলার ট্রিপ ইত্যাদি নোয়াখালী সোনাইমুড়ী কালিকাপুর গ্রামের এই সন্তান ইতিমধ্যে তরুণদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বাংলাদেশের তরুণ অভিনেতাদের মধ্যে শীর্ষ পাঁচ নম্বরে রয়েছে তার নাম।

তার অভিনীত বেচেলার পয়েন্ট নাটক জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৩ পর্ব প্রকাশিত হয়েছে ভবিষ্যতে তিনি চলচ্চিত্র অভিনয় করেন বা না করেন তাতে তার কোন ভাবনা নেই তবে ভাবনা আছে চলচ্চিত্র পরিচালনার । নাটক কিংবা চলচ্চিত্র দুভাবেই তিনি তার জেলাকে তুলে ধরতে চান পুরো দেশের কাছে ।

যাতে নোয়াখালী সম্পর্কে দেশের মানুষের কাছে ইতিবাচক ধারণা জন্ম হয় । এই নিয়ে তিনি একবার বলেন নোয়াখালী আমার জন্মভূমি নোয়াখালীকে ব্যাপক পরিচিত জন্য কাজ করে যাচ্ছি । নোয়াখালীর ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরার চেষ্টা করি

পলাশ  বলেন, তখন ইচ্ছা ছিল ইন্টারমিডিয়েটের পর ফারুকী ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করব। পরীক্ষার পর তার সঙ্গে যুক্ত হই। দীর্ঘদিন আমি তার সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছি। এরপর সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছি ইশতিয়াক আহমেদ রুমেল ভাইয়ের সঙ্গে।

সে সময় 'কারসাজি' নামে একটি সিরিয়ালে রোমেল ভাই দু-একটি দৃশ্য আমাকে দিয়ে অভিনয় করিয়েছিলেন। সেটা এতটা ফোকাস ছিল না। এরপর নিজেই যখন পরিচালনা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখনই পরিচয় হয় কাজল আরেফিন অমির সঙ্গে। অমি তার 'ট্যাটু' নাটকে আমাকে অভিনেতা বানিয়ে দেন।

সেখান থেকেই মানুষ অভিনেতা পলাশকে চিনতে শুরু করে। 'ট্যাটু'র সূত্র ধরেই মূলত অভিনেতা পলাশের আজকের অবস্থান। অভিনয়ে এত জনপ্রিয়তা পেলেও নিজের পরিচালক সত্তাকেও একটু ভোলেননি সময়ের জনপ্রিয় এ অভিনেতা। ২০১৮ সালে তিনি নির্মাণ করেন নিজের পরিচালনায় প্রথম নাটক 'ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিট'।

২০১৯ সালে 'সারপ্রাইজ' এবং ২০২০ সালে 'ঘরে ফেরা' নির্মাণ করেও দর্শকের প্রশংসা কুড়ান। গেল অক্টোবরে শিল্পী জুনায়েদ ইভানের 'নিজের জন্য' নামে একটি মিউজিক ভিডিও পরিচালনা করেছেন পলাশ। পাশাপাশি সাবিলা নূরকে নিয়ে 'অপো' মোবাইলের ওভিসিও নির্মাণ করেছিলেন।

পলাশ বলেন, 'অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি পেলেও নিজের ভেতর আমি একজন পরিচালক। অভিনেতা হিসেবে অন্য নির্মাতাদের গল্পে মানুষকে আনন্দ দিচ্ছি, মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি। কিন্তু পরিচালনা আমার স্বপ্নের জায়গা।

পরিচালক সত্তাটাকে বাঁচিয়ে রাখতেও পরিশ্রম করে যাচ্ছি। অভিনয়ের পর বাকি সময়টা পরিচালনাতেই দিই। গল্পের বই পড়ি, স্ট্ক্রিপ্ট রেডি করি, ফিল্ম নিয়ে স্টাডি করি। নিজের ভাবনাগুলো পরিচালনার মাধ্যমে মানুষকে দেখাতে চাই।'

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
Recent Articles