লো প্রেশার কিংবা হাই প্রেশার দুটোই স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর। অনেকেই মনে করেন দুর্বল স্বাস্থ্য যাদের, তারা নিম্ন রক্তচাপে ভুগে থাকেন। তবে এটা সত্য নয়। স্থুল মানুষেরও নিম্ন রক্তচাপ বা লো প্রেশার থাকতে পারে।
সাধারণত সিস্টোলিক রক্তচাপ ৯০ মি. মি. মার্কারি ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মি. মি. মার্কারির নিচে হলে তাকে লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়।
লো প্রেশারের লক্ষণ এবং লো প্রেশার হলে যা খাবেন
লো প্রেশারের ফলে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, বুক ধড়ফড়, অবসাদ, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া এবং স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হতে পারে।
তাই প্রেশার কমে গেলে বাড়িতেই প্রাথমিক কিছু পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। এতে তাৎক্ষণিকভাবে প্রেশার নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। বেশ কিছু ধরনের খাবার আছে যেগুলো খেলে প্রেশার স্বাভাবিক হবে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক হঠাৎ প্রেশার লো হয়ে গেলে কী করবেন সে সম্পর্কে-
লবণ পানি
লবণ রক্তচাপ বাড়ায়। কারণ এতে সোডিয়াম আছে। তবে পানিতে বেশি লবণ না দেয়াই ভালো। সবচেয়ে ভালো হয়, এক গ্লাস পানিতে দুই চা চামচ চিনি ও এক-দুই চা চামচ লবণ মিশিয়ে খেলে। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের চিনি বর্জন করাই ভালো।
কফি ও কোল্ড ড্রিংক
হঠাৎ করে লো প্রেশার দেখা দিলে এক কাপ কফি খেতে পারেন। স্ট্রং কফি, হট চকলেট, কোমল পানীয়সহ যে কোনো ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় দ্রুত ব্লাড প্রেশার বাড়াতে সাহায্য করে। আর যারা অনেক দিন ধরেই এ সমস্যায় ভুগছেন, তারা প্রতিদিন সকালে ভারী নাশতার পর এক কাপ কফি খেতে পারেন।
বিট জুস
বিটের রস হাই ও লো প্রেশার দুটোর জন্য সমান উপকারী। এটি রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। বিট ব্লেন্ড করে জুস তৈরি করে এক গ্লাস পরিমাণ প্রতিদিন খেতে পারেন। এভাবে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাবেন।
বিভিন্ন প্রকার বাদাম
লো প্রেসার হলে পাঁচটি কাঠবাদাম ও ১৫ থেকে ২০টি চিনাবাদাম খেতে পারেন। এটি প্রেশার বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া অন্যান্য যেকোনো বাদামও (পেস্তা, কাজু, আখরোট) লো প্রেশারের ক্ষেত্রে নির্দ্বিধায় খেতে পারেন।
পুদিনা পাতা ও মধু
পুদিনা পাতা ভিটামিন ‘সি’, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও প্যান্টোথেনিক উপাদানে ভরপুর, যা দ্রুত ব্লাডপ্রেসার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মানসিক অবসাদও দূর করে। পুদিনা পাতা বেটে নিয়ে এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে পান করতে পারেন।
যষ্টিমধু ও দুধ
আদিকাল থেকেই যষ্টিমধু বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এক কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ যষ্টিমধু দিয়ে রেখে দিন। দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পান করুন।
এ ছাড়া দুধে মধু দিয়ে খেলেও উপকার পাবেন। তবে একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন, অতিরিক্ত গরম দুধে কখনো মধু মিশিয়ে পান করবেন না। আপনি মধু মিশ্রিত দুধ থেকে পরিপূর্ণ কার্যকারিতা পেতে হলে, দুধ কুসুম কুসুম গরম অবস্থায় মধু দিয়ে পান করুন।
খাবার স্যালাইন
খাবার স্যালাইন লো প্রেশার দূর করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান। শরীরে পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার কারণে নিম্নরক্তচাপ হলে শুধু খাবার স্যালাইন মুখে দিলেই প্রেশার বেড়ে যায়।
লো ব্লাড প্রেশারে খাবার স্যালাইন সবচেয়ে উপযোগী এবং তাৎক্ষণিক ফলদায়ক।
পরিশেষ
আশা করি এই লেখাটি পড়ার পর, আপনারা যারা লো প্রেশার সমস্যায় ভুগছেন তারা উপকৃত হবেন।আজ এ পর্যন্তুই।আল্লাহ হাফেজ।
You must be logged in to post a comment.